Haldia Murder: হলদিয়ায় মা ও মেয়েকে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শেখ সাদ্দাম সহ মোট চারজনকে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত করে তমলুকের জেলা ও দায়রা আদলতের বিচারপতি। শনিবার তাদের চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা ঘোষনা করেন বিচারপতি প্রিয়ব্রত দত্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হলদিয়া পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুরখালি এলাকায় হলদি নদীর ধারে অর্ধদগ্ধ দুই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার মূল অভিযুক্ত হলদিয়ার বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম হোসেন। তার সঙ্গে রমা দে নামে ব্যারাকপুরের এক মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়। হলদিয়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে রমা ও তাঁর আঠারো বছরের মেয়ে রিয়াকে নিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করে শেখ সাদ্দাম।
সাদ্দামের পরিবার থাকা সত্ত্বেও রমার পাশাপাশি তাঁর মেয়ে রিয়া ওরফে জেসিকার সঙ্গেও সাদ্দামের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে শেখ সাদ্দাম রিয়াকে বিয়ে করে। মা ও মেয়ে দু'জনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে গিয়ে তৈরি হয় বিবাদ। আর সেই বিবাদের কারণেই মা মেয়ের মৃত্যু। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শেখ সাদ্দাম রমা এবং রিয়াকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। তারপরে তিন জন সঙ্গীর সাহায্য নিয়ে রমা এবং রিয়াকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে পৌঁছে যায় ঝিকুরখালি এলাকায়।
পেট্রোল ঢেলে মা ও মেয়েকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে শেখ সাদ্দাম ও তার সঙ্গীরা। স্থানীয় কাউন্সিলার ভক্তিপ্রসাদ বলিদার দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্গাচক থানার পুলিশ শেখ সাদ্দাম হোসেন, মঞ্জুর আলম মল্লিক, শুকদেব দাস ওরফে শিবু এবং আমিনুর হোসেন ওরফে সিন্টুকে গ্রেপ্তার করে দূর্গাচক থানার পুলিশ। ঘটনার ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট দেয় পুলিশ।
হলদিয়া আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (একই উদ্দেশে সম্মিলিত অপরাধ) ধারায় চার্জ গঠন হয়। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় তমলুকের জেলা ও দায়রা আদালতে।দীর্ঘদিনধরে চলার মামলার রায় ঘোষণা হয় শনিবার। শেখ সাদ্দাম সহ অভিযুক্ত চারজনের পরিবারে পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে মামলা বিবেচনা করার জন্য আবেদন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন সকাল থেকে তমলুকে জেলা ও দায়রা আদালতে সামনে মানুষের ভিড় জমে। দুপুর ১২ টা নাগাদ তাদের আদালতে পেশ করা হয়। বেশ কয়েক ঘন্টার আলোচনার পর দুপুর ২ টা নাগাদ বিচারপতি রায় দান করেন।