/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/09/malda-2025-10-09-16-08-26.jpg)
শিশুকন্যাকে উদ্ধার!
বাড়ির সামনে থেকে সাড়ে তিন বছরের কন্যা শিশুকে অপহরণ করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের কোতল এলাকায়। যদিও পুলিশের ধাওয়া খেয়েই চলন্ত বাইক থেকে ওই কন্যা শিশুকে ফেলে দিল অপহরণকারীরা।
শিশুটিকে উদ্ধারের পর পুলিশ ধাওয়া করে এক অপহরণকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। বুধবার দুপুরে এমন ঘটনাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়ায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কোতল এলাকায়। মাথায় চোট পাওয়ার জন্য চলন্ত বাইক থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পায় ওই কন্যা শিশুটি।
তড়িঘড়ি তাকে তদন্তকারী পুলিশকর্তারা হরিশ্চন্দ্রপুর সরকারি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চাচোলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিত সরকার সহ পদস্থ পুলিশ অফিসারেরা। পরে অবশ্য ওই শিশু কন্যার চিকিৎসা করার পর পরিবারে হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। এই অপহরণের ঘটনায় ধৃতকে জেরা শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম ছোটন নাগ। তার বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায়। এর আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ধৃত ওই যুবক। অপর আরেক অপহরণকারীর খোঁজ চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন- রানওয়ে থেকে টেক অফের সময়ই পাশের ঝোপে মুখ থুবড়ে পড়ল বিমান, উত্তরপ্রদেশে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই দিন আগে ওই শিশু কন্যা তার মায়ের সঙ্গে কোতল গ্রামে দাদুর বাড়িতে ঘুরতে এসেছে। তাদের বাড়ি রশিদাবাদ এলাকায় ।এদিন দুপুরে ওই শিশু কন্যা তার এক মামাতো পাঁচ বছরের ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের একটি দোকানে আইসক্রিম কিনতে যাচ্ছিল।
সেই সময় মোটরবাইকে আসা দুই যুবক ওই কন্যা শিশুকে তুলে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরেই পরিবারের লোকেরা হৈচৈ শুরু করে। নানান মাধ্যম দিয়ে পুলিশকে ফোনে জানানো হয়। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে বিহার সহ আশেপাশে যাওয়ার সমস্ত রাস্তায় নাকা চেকিং শুরু করে দেয় । এরপরই ওই অপহরণকারীদের ধাওয়া করতেই কন্যা শিশুকে চলন্ত মোটরবাইক থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়।
উদ্ধার হওয়া ওই শিশু কন্যার মা জানিয়েছেন, মেয়েকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেই আমার এক সিভিক ভলেন্টিয়ার কাকুকে ফোন করি। উনি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় কর্মরত। তারপরেই পুলিশ অপহরণকারীদের ধাওয়া করে বলে জানতে পারি। ঘটনার প্রায় আধ ঘণ্টার মধ্যেই মেয়েকে পুলিশ উদ্ধার করে। কি উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতীরা আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কন্যা শিশুর বাবা হরিশ্চন্দ্রপুরের একজন কাপড় ব্যবসায়ী।
যারা এই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছিল, তারা পেশাদার দুষ্কৃতী। এই ধরনের অপহরণ করে বিভিন্নভাবে মোটা টাকার হুমকি দিয়ে থাকে ধৃত এবং তার দলবল। এদিন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এসআই জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মিলেছে এই সাফল্য।
আরও পড়ুন- 'লর্ড ক্যানিং হাউস', ব্রিটিশ আমলের ঐতিহাসিক ভবন ঘিরে নানা কাহিনী আজও চর্চায়!
কর্তব্যরত ওই এসআই কয়েকজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সঙ্গে নিয়েই গাড়ি করেই অপহরণকারীদের খোঁজ শুরু করে । হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে বিহারের দিকে যাওয়ার সীমান্ত রাস্তায় দুই যুবককে মোটরবাইকে এক শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে দেখে সন্দেহ করে। তারপরেই ধাওয়া করতেই একজন অপহরণকারী কে ধরে ফেলে পুলিশ।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, ওই শিশু কন্যার অপহরণের অভিযোগে একজন দুষ্কৃতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আরেক দুষ্কৃতী পলাতক। তার খোঁজ চালানো হচ্ছে। এই ঘটনার পিছনে কি ষড়যন্ত্র রয়েছে, সেটিও তদন্ত করে দেখছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।