Honey collection begins in the Sundarbans: সুন্দরবনের (Sundarban) গভীর জঙ্গলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু মধু সংগ্রহের কাজ। রায়দিঘী রেঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু সংগ্রহের সূচনা হয়েছে। বনদফতর জানিয়েছে, এই বছর মোট ৫৫টি দলকে মধু সংগ্রহের জন্য পারমিট দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দলে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত জনের মধ্যে। প্রথম পর্যায়ে ১৫ দিনের অনুমতি নিয়ে তাঁরা জঙ্গলে প্রবেশ করবেন। মধু সংগ্রহ মৌলেদের অন্যতম প্রধান জীবিকা হলেও এই কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
Advertisment
বাঘের আক্রমণ কিংবা জঙ্গলের অন্যান্য বিপদের কথা মাথায় রেখেই এবার নিরাপত্তায় জোর দিয়েছে বনদফতর। মৌলেদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জঙ্গলের কোনও কোনও অংশে তারা যেতে পারবেন এবং কোন অংশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জঙ্গলে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য বনদফতরের পেট্রোলিং চলবে নিয়মিত। পাশাপাশি মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশের তরফ থেকেও নজরদারি চালানো হবে।
সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ারের অধিকর্তা নীলাঞ্জন মল্লিক বলেন, "জীবনের দাম সব কিছুর থেকে অনেক বেশি। তাই মৌলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম কাজ। সমস্ত মৌলেদের ফোন নম্বর বনদফতরের কাছে রাখা হয়েছে এবং বনদফতরের জরুরি নম্বর তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কারও কোনও সমস্যা হলে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন তারা। নিরাপত্তার পাশাপাশি মৌলেদের জন্য ইন্সুরেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ইন্সুরেন্সের মেয়াদ এক বছর।"
কেউ আহত হলে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং কারও মৃত্যু হলে পরিবার পাবে ৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও মৌলেদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে মুখোশ, গ্লাভস, ফাস্ট অ্যাড বক্স, ড্রাম। প্রতিটি দলের কাছে থাকা রেডিও-র মাধ্যমে তারা আবহাওয়া এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপডেট পেয়ে যাবেন। এবার মধুর দামও বাড়ানো হয়েছে। গতবারের তুলনায় কেজি প্রতি ৫ টাকা করে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বনদফতর মনে করছে এতে মৌলেরা কিছুটা হলেও আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। এবারের লক্ষ্য ১০ টন মধু সংগ্রহ।
এদিকে, মধু সংগ্রহকে কেন্দ্র করে এলাকার পরিবারগুলিতে দুশ্চিন্তার ছায়া নেমে আসে। মৌলেরা চিতুরী বীট অফিসে বনবিবির পুজো দিয়ে জঙ্গলে রওনা হন। পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জনের সুস্থভাবে ফিরে আসার প্রার্থনা করেন। এই সময় বাড়িতে রান্না বন্ধ থাকে, স্ত্রী ও পরিবার সদস্যরা প্রায় বিধবার মত জীবন যাপন করেন। তবুও জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সুন্দরবনের এই প্রাচীন পেশাকে ধরে রেখেছেন এখানকার মানুষ।