হাওড়া শহরের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাঁর নাম, তিনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পাঁচশো বছরের বেশি সময় ধরে বঙ্কিমচন্দ্রের বহমান স্মৃতিকে আগলে রাখার উদ্যোগ নিলেও আজও গড়ে ওঠেনি সেই সংগ্রহশালা, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন হাওড়ায় বসবাস করেছিলেন সাহিত্য সম্রাট। হাওড়ায় তিনি যে বাড়িতে বসবাস করতেন সেই বাড়িটি এবং তাঁর সংলগ্ন বেশ কিছুটা জমিতে দীর্ঘদিন আগে গড়ে ওঠে তাঁরই নামাঙ্কিত বঙ্কিম পার্ক। এমনকী কয়েক বছর আগে সেই পার্ক ও সংলগ্ন এলাকায় বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতিতে একটি সংগ্রহশালা ও অডিটোরিয়াম গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন তৃণমূল পুরো বোর্ড প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিলেও এখনও তা গড়ে ওঠেনি।
আরও পড়ুন- হাওড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আট বছরের শিশুর মৃত্যু, প্রশ্নের মুখে প্রোমোটার
প্রসঙ্গত, ১৮৮১ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত চাকরির সূত্রে হাওড়ায় কর্মরত ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ইতিহাস বলে, সেই সময়ে তিনি থাকতেন ২১২ নম্বর পঞ্চাননতলা রোডের এই বাড়িটিতেই। পরবর্তীতে তাঁর স্মৃতি বিজরিত বাড়িটির সামনের তৈরি করা হয় একটি পার্ক, নাম রাখা হয় বঙ্কিম পার্ক। এরপর যত উন্নত হয়েছে হাওড়া, ততই ক্রমশ বিস্মৃতির আড়ালে ঢাকা পড়তে থেকেছে এই বাড়িটি। তবে ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধিরা স্মৃতিধন্য বাড়িটি পরিদর্শন করেন। এমনকী বাড়িটিকে রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে উদ্যোগীও হয় হাওড়া পুর নিগম।
উল্লেখ্য, হাওড়ার তৎকালীন মহানাগরিক এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ রথীন চক্রবর্তী বঙ্কিমচন্দ্রের নামাঙ্কিত পার্ক এবং বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটিকে নিয়ে একটি সংগ্রহশালা, অডিটোরিয়াম, ইত্যাদি তৈরি করার উদ্যোগ নেন। এ জন্য তিনি ৫ কোটি টাকা মঞ্জুরের কথাও ঘোষণা করেন। তবে টাকা এলেও কাজ শুরুই হয়নি বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। কিন্তু, অর্থমঞ্জুরির পরও কেন এখনও পর্যন্ত একটিও ইঁট গাঁথা হয়নি? হাওড়ার সাংস্কৃতিক উন্নয়ন মঞ্চের কো-অর্ডিনেটার নিশীথ সরকার বলেন, "রাজ্য সরকারের কাছে এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করার আবেদন জানাচ্ছি আমরা"।
আরও পড়ুন- মমতা এফেক্ট? হাওড়ায় নিকাশি সংস্কারে জোর পুরসভার
অন্যদিকে, হাওড়ার পুরকমিশনার তথা প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ এই বলেন, “গ্রfন সিটি প্রজেক্ট থেকে ৫ কোটি ৩৬লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল কয়েক বছর আগে। তবে এখনও কিছু টেকনিক্যাল কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। ইতিমধ্যে স্থান পরিবর্তনের একটি প্রস্তাব আসে। কিন্তু একটি প্রজেক্টের স্থান পরিবর্তন করতে গেলে যেহেতু রাজ্য সরকারের বিশেষ অনুমোদন লাগে তাই কিভাবে কাজটি সম্পন্ন করা যায় সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে"।
হাওড়ার সব খবর পড়ুন এখানে