সারা দিনের কাজ সেরে বিহারের কিউল জংশনে বাড়ি ফেরার জন্যে হাওড়া স্টেশনে সন্ধ্যাবেলায় পৌঁছেছিলেন রণজয় সিং। মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়ার জন্যে স্টেশনের একটি চার্জিং পয়েন্টে ফোনটি লাগিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। কয়েক মূহুর্তের জন্যে চার্জে লাগানো ফোনটি থেকে চোখ সরিয়েছিলেন। ব্যস, ফোন গায়েব! শুধুমাত্র রণজয়ের মোবাইল ফোনই নয়, এমন অনেক যাত্রীরই পকেট থেকে মানিব্যাগ, মায় ল্যাপটপও চুরি যেত হাওড়া স্টেশন থেকে। যাত্রীদের মূল্যবান সামগ্রী খোয়া যাওয়ার পাহাড়প্রমাণ অভিযোগের কয়েকটি কিনারা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাগাল পাওয়া যেত না অপরাধীদের। তবে সেই ছবি বদলেছে, সৌজন্যে হাওড়া স্টেশনে আরপিএফের বিশেষ দল টিওপিবি (থেফট অফ প্যাসেঞ্জার্স বিলংঙ্গিস)।
আরও পড়ুন: বন্ধ থাকতে পারে বঙ্কিম সেতু, তীব্র যানজটের আশঙ্কা হাওড়ায়
যাত্রীদের অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে কখনও মোবাইল ফোন, কখনও যাত্রীদের টাকা, কখনও ল্যাপটপ হাতিয়ে নিত একদল দুষ্কৃতি। এমনই পাহাড় প্রমাণ অভিযোগের সামনে দাঁড়িয়ে হাওড়া স্টেশনের ভেতরে ঘটে চলা এইসব অপরাধ বন্ধ করতে গত কয়েকমাস আগে বিশেষ পরিকল্পনা নেয় হাওড়া স্টেশনের দায়িত্বে থাকা আরপিএফ। আরপিএফের আই জি আর কে মালিকের পরিকল্পনা মাফিক তৈরি করা হয় একটি বিশেষ দল ‘থেফট অফ প্যাসেঞ্জারস বিলংঙ্গিস' বা সংক্ষেপে টিওপিবি। ২০ জন সদস্যের এই দলটি সাদা পোশাকে সাধারণ যাত্রীদের ভিড়ে মিশে ২৪ ঘণ্টাই হাওড়া স্টেশনের নতুন ও পুরনো কমপ্লেক্সে টহল দিতে শুরু করে। যার জেরেই হাওড়ার মতো ব্যস্ততম স্টেশনে এ ধরনের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে লাগাম টানা গিয়েছে বলে দাবি রেলের।
আরও পড়ুন: হাওড়ার প্রবীণদের পাশে পুলিশ, চালু ‘শ্রদ্ধা’ প্রকল্প
এ প্রসঙ্গে, হাওড়ার আরপিএফের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমান্ডান্ট রজনিশ কুমার ত্রিপাঠি বলেন, “এই বিশেষ টিম এখনও পর্যন্ত ১০০জনেরও বেশি দুষ্কৃতীকে ধরতে পেরেছে। যার মধ্যে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারিদের কিংপিন শারদ গুপ্তা অন্যতম’’। তিনি আরও জানান ইতিমধ্যেই হাওড়া স্টেশনে ২৫০টির বেশি অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোলরুমও। যেখান থেকে সর্বক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছেন আরপিএফ কর্মীরা। রজনীশ জানান, কখনও ২০ দিন তো কখনও ৩ মাস সময় ধরে নজর রাখা হয় সন্দেহভাজনের ওপরে। একেবারে ক্রিকেট মাঠের সেরা ফিল্ডারের মতই শিফটের পরে শিফট নজর রেখে চলেন টিওপিবি টিমের সদস্যরা।
হাওড়ার সব খবর পড়ুন এখানে