২০১৯-এ লক্ষ্য ছিল ২২টি আসন। জুটেছিল ১৮। যদিও ওই আসনপ্রাপ্তিতে অবাক হয়েছিল রাজনৈতিক মহল। পরবর্তীতে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপিকে ২০০ আসনের টার্গেট দেন। বিজেপি পেয়েছিল ৭৭টি আসন। একবছর আগে ফের অমিত শাহ লোকসভা নির্বাচনে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিলেন ৩৫ আসনের। কেন এই টার্গেটের রাজনীতি করে বিজেপি? বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপির এই কৌশল নিয়ে নানা ধরনের চর্চা অব্যাহত।
২০১৯-এ ৫৪৩ লোকসভা আসনের মধ্যে এনডিএ জোটের শীর্ষ শরিক বিজেপি নিজেই পেয়েছিল ৩০৩টি আসন। কোনও কোনও রাজ্যে ধরাছোঁয়ার বাইরে আসন পেয়েছে পদ্মশিবির। সাধারণত কোনও রাজ্যে দীর্ঘদিন কোনও দল ক্ষমতায় থাকলে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ফ্যাক্টর কাজ করে থাকতে পারে। এই ভয় কিন্তু সব দলেরই রয়েছে। উত্তর পূর্ব বা পূর্ব ভারতে বিজেপির তেমন একটা প্রভাব একটা সময় ছিল না। নতুন নতুন জায়গায় আসন জয়ের সন্ধানে নেমে পড়ে বিজেপি।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, রাজনৈতিক দলগুলির একটা শঙ্কা সবসময়ই থাকে। পুরনো কেন্দ্রগুলোয় জয় কমতে থাকলে বিকল্প রাস্তা খোলা রাখতে হয়। সেই পথেই হেঁটেছে বিজেপি। রামনবমীর মিছিলও বেড়েছে সেই সব রাজ্যে। ইতিমধ্য়ে উত্তর ভারত থেকে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলের মতে, লক্ষ্য ধার্য করার মাধ্যমে স্থানীয়স্তরের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করছে বিজেপি। দিচ্ছে ক্ষমতার হাতছানি।
আরও পড়ুন- প্রবল গরমে জ্বলে-পুড়ে খাক বাংলা! ‘কাল থেকেই স্কুলে ছুটি’, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
তবে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পঞ্চায়েত ভোট নয়, লোকসভাই যে তাঁদের মূল লক্ষ্য তা-ও এর মধ্য দিয়ে বুঝিয়েছেন অমিত শাহ। বাম-কংগ্রেস বরাবর তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গোপন আঁতাতের অভিযোগ করে আসছে। আসন ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও বারে বারে আনা হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি ৩৫ আসনের লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছে বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে? এই জল্পনা চলছে। ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে অভিযোগ তো রয়েছেই। তবে ৪২-এ ৩৫ বিজেপি, তা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশ মুচকি হাসছেন। তৃণমূল কংগ্রেস গত লোকসভা নির্বাচনে স্লোগান তুলেছিল ৪২-এ-৪২।
৪২-এ-৩৫-তে বড় খটকা লাগছে রাজনৈতিক মহলের। অভিজ্ঞ মহলের মতে, ভোটের হাওয়া তোলার ক্ষেত্রে গেরুয়া শিবিরের জুড়িমেলা ভার। এক বছর আগে থেকেই পরিবেশ তৈরির চেষ্টা শুরু হল। তবে কোন জাদুবলে এরাজ্য থেকে বিজেপি ৩৫টি আসন পাবে, তা ভেবে কূল পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। কিন্তু এই ঘোষণার পিছনে বিশেষ বার্তা দেওয়ার কৌশল দেখছে পর্যবেক্ষক মহল।