/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/23/ai-2025-09-23-11-19-42.jpg)
Nuclear Power: ফাইল ফটো।
AI Data Centers-Nuclear Power: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-র দ্রুত বিস্তারের ফলে দেশে ডেটা সেন্টারের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে ডেটা সেন্টারের জন্য নির্ভরযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন শক্তি সরবরাহের লক্ষ্যে ছোট মডুলার রিঅ্যাক্টর (SMR)-নির্ভর পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে শিল্প মহলকে জানানো হয়েছে, আসন্ন জাতীয় ডেটা সেন্টার নীতিতে এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হবে।
আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার (IEA) পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে ডেটা সেন্টারের বিদ্যুৎ ব্যবহার দ্বিগুণ হতে পারে। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যে পৌঁছানো ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ইতিমধ্যেই গুগল ও মাইক্রোসফ্টের মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থা তাদের ডেটা সেন্টার চালাতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করেছে।
ভারতে এক মেগাওয়াট ক্ষমতার ডেটা সেন্টার গড়তে ৬০–৭০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। কেয়ারএজ রেটিংস জানিয়েছে, এই ধরনের প্রকল্পের ৪০% মূলধনী ব্যয় বৈদ্যুতিক অবকাঠামোর পেছনে এবং ৬৫% পরিচালন ব্যয় বিদ্যুতের জন্য খরচ হয়। বর্তমানে দেশের ডেটা সেন্টার বাজারের আকার ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, আর্থিক বছর ২০২৩–২৪-এ যার রাজস্ব ১.২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হবে বলে অনুমান। রিয়েল এস্টেট সংস্থা জেএলএল-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতে আরও ৭৯৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা যোগ হবে এবং মোট ক্ষমতা পৌঁছবে ১.৮ গিগাওয়াটে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, এতো শক্তি-নিবিড় একটি শিল্পকে সরকার কতটা নীতিগত প্রণোদনা দেবে? নবায়নযোগ্য শক্তির প্রতি ঝোঁক থাকলেও, সোলার ও উইন্ড এনার্জির সীমাবদ্ধতা রয়েছে—সূর্য বা বাতাসের অনুপস্থিতিতে উৎপাদন থেমে যায়, পাশাপাশি পর্যাপ্ত স্টোরেজের অভাবও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, সার্বক্ষণিক পরিচ্ছন্ন শক্তি হিসেবে পারমাণবিক শক্তি একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
আরও পড়ুন- Kolkata Waterlogging:লাগাতার বৃষ্টিতে জলের তলায় কলকাতা, শহরে মৃত্যুমিছিল! সরকারকেই দুষছেন শুভেন্দু
বিশ্বে এখন পর্যন্ত দুটি SMR প্রকল্প বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর হয়েছে—রাশিয়ার Akademik Lomonosov ভাসমান বিদ্যুৎ ইউনিট (২০২০) এবং চীনের HTR-PM (২০২৩)। ভারতও ধীরে ধীরে এই প্রযুক্তির উৎপাদন মূল্য শৃঙ্খলে প্রবেশের উদ্যোগ নিচ্ছে।
তবে সবচেয়ে বড় বাধা ২০১০ সালের নাগরিক পারমাণবিক দায়বদ্ধতা আইন (Civil Liability for Nuclear Damage Act)। এই আইনে অপারেটরের পাশাপাশি সরবরাহকারীদের প্রতিও ক্ষতিপূরণের দায়বদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে, যা বিদেশি সরঞ্জাম বিক্রেতাদের কাছে বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এই জটিলতা শিথিল করার কথা বলা হয়েছে, যাতে বিদেশি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি ভারতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অংশীদার হতে পারে।
সরকার বাজেটে এই সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ সফল হলে শুধু পরিষ্কার শক্তির লক্ষ্য পূরণই হবে না, বরং ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।