India Pakistan Conflict: অপেরেশন সিন্দুর নিয়ে সংসদীয় কমিটিকে বিস্তারিত তথ্য দিলেন বিদেশ সচিব, 'পরমাণু হুমকি' নিয়ে কী জানালেন?
ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা ঘিরে সোমবার সংসদের বিদেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে বিস্তারিত তথ্য দিলেন বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রী। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, যার মধ্যে ছিলেন টিএমসির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের রাজীব শুক্লা ও দীপেন্দ্র হুড্ডা, এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, এবং বিজেপির অপরাজিতা সারাঙ্গি ও অরুণ গোবিল।
সোমবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি সংসদীয় কমিটিকে একটি বিস্তারিত ব্রিফিং দিয়েছেন। তিনি বলেন, সামরিক পদক্ষেপ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিকভাবে নেওয়া হয়েছে এবং এতে কোনও মার্কিন হস্তক্ষেপ নেই। তিনিএও জানিয়েছেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনও পারমাণবিক হামলার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। ১০ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা করা হয়। তার ৯দিন পর সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিকে ব্রিফিংয়ে বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি বলেন যে সামরিক পদক্ষেপ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিকভাবে নিয়েছে এবং এই বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের সকল দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতিতে মধ্যস্থতার কৃতিত্ব আমেরিকা নিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর দুই দেশ সম্পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্পই প্রথম দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন, যা বিতর্কের সৃষ্টি করে। কমিটির কয়েকজন সদস্য পাকিস্তানের সম্ভাব্য চিনা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কিন্তু বিদেশসচিব মিস্রি এই আশঙ্কা ‘অপ্রাসঙ্গিক’ বলে উড়িয়ে দেন, এবং জানান, ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বেশ কিছু বিমানঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।
কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি বারবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সোমবারও, বিরোধী দলের সদস্যরা বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রিকে ট্রাম্পের সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা সহ বেশ কয়েকটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন। সোমবার কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বে দু ঘন্টার কিছু বেশি সময় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্রম মিস্রি কমিটির সামনে জানিয়েছেন,অপারেশন সিন্দুর শুরুর আগে ভারত পাকিস্তানকে এ বিষয়ে অবহিত করেনি। উল্লেখ্য এইইস্যুতে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেস নেতারা ক্রমাগত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আক্রমণ করে চলেছেন। রাহুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, বিদেশ মন্ত্রক এটিকে বিবৃতিতে ভুল ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
বিরোধী দলের তরফে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় পহেলগাঁও হামলায় জড়িত জঙ্গিদের অবস্থান এবং পাশাপাশি ভারত তাদের ধরার জন্য কী করছে তা জানতে চেয়েছেন। আরেক সদস্য বিক্রম মিস্রিকে জিজ্ঞাসা করেন যে ভারত সরকার বিশ্ব মঞ্চে পাকিস্তানকে কোন ঠাসা করার জন্য কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? সরকার ঘোষণা করেছে, ৩৩টি দেশের রাজধানীতে একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে, যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান তুলে ধরবে। এই উদ্যোগ ভারত সরকারের বিস্তৃত কূটনৈতিক কৌশলের অংশ, যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করতে চায় দিল্লি।