Inspirational Story: বয়স যে শুধু মাত্র সংখ্যা তা প্রমাণ করে দেখাচ্ছেন কোলাঘাটের প্রবীণ মহিলা লক্ষ্মীবালা মাইতি। এই বয়সেও তিনি কর্মরতা এবং উপার্জনক্ষম। প্রতি সোমবার এবং শুক্রবার কোলাঘাটের নিউবাজারে তিনি সব্জি বিক্রি করেন। লক্ষ্মীবালা দেবীর জন্ম ১৯২০ সালে, কোলাঘাটের বাগডিহা গ্রামে। ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও শরিক হয়েছিলেন তিনি। বিয়ে হয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৩ বছর বয়সে। কিন্তু বিয়ের পরেও কারও ওপর নির্ভরশীল হতে চাননি।
এরপর থাকতে শুরু করেন যোগীবেড় গ্রামে। সে সময়েই ঠিক করেন সংসারের হাল ধরতে স্বামীর পাশে দাঁড়াবেন। তাঁর ইচ্ছায় বাধা হয়ে দাঁড়াননি তাঁর স্বামী। তবে তারপরেও পাঁচ কন্যা এবং এক ছেলের মায়ের জীবন মসৃণযাত্রা ছিল না। অল্প বয়স থেকেই তিনি বাজারে সবজি ফেরি করতে বসেন। তার মধ্যেই সংসারে বিপর্যয়। ছেলের বয়স যখন মাত্র সাত বছর, তিনি স্বামীকে হারান।
লড়াই আরও মজবুত হয় এরপর। আজ, তাঁর ছেলের গৌড়ের চায়ের দোকান আছে কোলাঘাট বাজারে। প্রতি সপ্তাহের নির্ধারিত দুই দিনে তিনি ভোর তিনটের সময় বাজারে পৌঁছোন ছেলের সাইকেলে। তারপর স্থানীয় চাষিদের কাছ থেকে আনাজপাতি ও দানাশস্য কিনে শুরু হয় তাঁর দোকান। চলে দুপুর পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- Malda News: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন দুলাল সরকার? মালদায় তৃণমূল নেতা খুনে দলেরই অপর নেতা গ্রেপ্তার
বয়সের ভারে কমেছে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি। কিন্তু তাঁর জীবন-সংগ্রাম থেমে যায়নি। এই বৃদ্ধা আজ অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে চান না। স্বনির্ভর হয়ে বাকি জীবনও কাটাতে চান। লক্ষ্মীদেবী বলেন, "বয়সের কারণে স্মৃতি শক্তি কমলেও মনের জোরে প্রায়শই কোলাঘাটে ব্যবসার জায়গায় যাই। তবে নিজে যেতে পারি না। ছেলে বা প্রতিবেশীদের সাহায্যে যাই। দীর্ঘ সময় হাটে থাকতে পারি না। কিন্তু ওখানে গেলে মনে আলাদা শক্তি মিলে তাই যাই।" স্থানীয় বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, "লক্ষ্মীবালাদেবী আমাদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে গর্বের। ওঁকে দেখে আমরা অনেক কিছু শিখছি। উনি আরও বহুদিন আমাদের মধ্যে থাকুক এটাই প্রার্থনা করি।"
আরও পড়ুন- Sheikh Hasina : হাসিনাকে জেলবন্দী করতে মরিয়া ইউনূস সরকার, ভারতের মোক্ষম চালে দিশেহারা বাংলাদেশ