International Mother Language Day 2025:পেট্রাপোল বন্দরে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে উদযাপিত হল না আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান। চেনা পেট্রাপোলে ২১ ফেব্রুয়ারিতে অচেনা ছবি। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের দিনে দুই বাংলার মানুষ জিরো পয়েন্টে একত্রিত হন, মেলবন্ধন হয় এপার ও ওপার বাংলার মানুষের। দুই বাংলার সেই আবেগি-সম্পর্কে ছেদ পড়লো এবার। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির জেরে জিরো পয়েন্টে এবার মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান হল না।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভাষা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠান নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখায়নি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই নিয়ে কোনও বার্তা বা যোগাযোগও করা হয়নি। বাংলাদেশের সদিচ্ছার অভাব থাকায় এবার পেট্রাপোলে দুই বাংলার এই 'মিলন' হল না। বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, "বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে যোগাযোগ করেনি। আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের দিক থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। তাঁদের সদ্বিচ্ছার অভাবেই দুই বাংলার মিলন হল না।"
বিগত বছরগুলিতে উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বিশেষ এই দিনটিতে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া মলিন হয়ে যেত। থাকত না সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কড়াকড়ি। সীমান্তে এসে মিলতেন দুই বাংলার অগণিত ভাষাপ্রেমী মানুষ। তবে এই বছর দেখা গেল না সেই মিলনের ছবি। ২১ ফেব্রুয়ারি নজিরবিহীনভাবে ফাঁকাই পড়েই রইল সীমান্তের জিরো পয়েন্ট। বাংলাদেশের বেনাপোলেও দেখা মেলেনি বাংলাদেশিদের। অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ যাঁরা পেট্রাপোল সীমান্ত এসেছিলেন তাঁরাও ভারাক্রান্ত মনে ফিরলেন সীমান্ত থেকে।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: সুপ্রিম কোর্টে নতুন আবেদন পার্থের, CBI-কে নোটিশ শীর্ষ আদালতের
পেট্রাপোলে দুই বাংলার মিলনের ছবি দেখতে এসে হতাশ হয়ে ফিরলেন বৃদ্ধ জগন্নাথ বিশ্বাস। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, "আমরা মিলনের ছবি দেখতে চাই। এপার বাংলা ও ওপার বাংলা মিলেমিশে একাকার হবে... আবেগে চোখ দিয়ে জল ঝরবে... আমরা সেই ছবি দেখতে চাই।"
আরও পড়ুন- Tarapith Accident: মর্মান্তিক মৃত্যু তারাপীঠ মন্দিরের সেবায়েতের, শোকের ছায়া এলাকায়
তবে সাধারণ মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভারতীয় ভূখণ্ডে ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয়। পেট্রাপোলে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদিতে পুস্পার্ঘ্য নিবেদনের মধ্য দিয়ে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। ভাষা দিবসের অস্থায়ী মঞ্চে বাংলা ভাষার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।