Rath Yatra of Lord Jagannath: ১০ হাজার পুলিশ, অত্যাধুনিক AI‑ক্যামেরা ও NSG স্নাইপারসহ প্রথমবারের মতো 'সুপার‑সিকিউর' রথযাত্রা, ভক্তির জোয়ারে ভাসছে পুরী।
আরও পড়ুন- রথযাত্রায় দিঘায় যাবেন? বাম্পার বন্দোবস্ত! ছুটছে স্পেশাল লোকাল ট্রেন, প্রায় সর্বত্র মিলছে বাস
ওড়িশার পুরীতে শুরু হতে চলেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। আগামীকাল শুক্রবার, ২৭ জুন, দ্বাদশ শতাব্দীর জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু হবে এই মহাযাত্রা। উৎসব চলবে ৯ দিন, যার সমাপ্তি হবে ৫ জুলাই 'বাহুদা যাত্রা'-র মাধ্যমে। এই উৎসব শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর হাজার হাজার বিদেশি ভক্তও রথযাত্রা প্রত্যক্ষ করতে পুরীতে আসেন। বিশাল রথ টানার দৃশ্য, ঐতিহ্যবাহী আচার এবং বিশুদ্ধ ভক্তি– সব মিলিয়ে এই উৎসব পরিণত হয়েছে সাংস্কৃতিক ঐক্য ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক-এ।
আগামীকাল “মহারথযাত্রা"! উৎসবমুখর পুরী।ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা সৈকতনগরীতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। চলতি বছর, এই রথযাত্রা ২৭ জুন, ২০২৫ শুক্রবার পালিত হবে। আগামীকাল থেকে ৯ দিন চলবে উৎসব। ৫ জুলাই, ২০২৫ 'নীলাদ্রি বিজয়ে'র মাধ্যমে রথযাত্রার উৎসব শেষ হবে। দ্বাদশ থেকে ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যে শুরু হয়েছিল এই ঐতিহাসিক রথযাত্রা। জগন্নাথ রথযাত্রার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে অজানা নানান ইতিহাস ও পৌরাণিক কাহিনী।
রথযাত্রার আগে সেজে উঠেছে জগন্নাথ ধাম পুরী। রথযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানান রীতিনীতি। প্রথমে রথকে স্নান করা হয়। ১০৮টি পাত্রের পবিত্র জল দিয়ে দেবতাদের স্নান করানো হয়। তারপর রথ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এতে পুরোহিতরা বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে নতুন রথগুলিকে পবিত্র করেন। রথযাত্রা এই উৎসবের সবচেয়ে বিশেষ অংশ যেখানে হাজার হাজার ভক্ত ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার রথ গুন্ডিচা মন্দিরে টেনে নিয়ে যান। দেবতারা সেখানে নয় দিন অবস্থান করেন।
রথযাত্রার জন্য ১০,০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে যে প্রায় ১৫ লক্ষ ভক্তের ভিড় সামাল দেওয়ার দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্যামেরা এবং ড্রোন নজরদারি। শহরের নির্দিষ্ট স্থানে সাব-কন্ট্রোল রুমও স্থাপন করা হয়েছে। পহেলগাঁও কান্ডের পর এবারের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে এবার প্রথম এনএসজি কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড। থাকছে বিশেষ ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থাও। ওড়িশা পুলিশের সাথে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) আটটি কোম্পানিও মোতায়েন করা হয়েছে। মেরিন পুলিশ, ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্রসীমা পর্যবেক্ষণের জন্য একসাথে কাজ করছে। তারা সমুদ্রের উপর কড়া নজর রাখছে।
মহাপ্রভু জগন্নাথের মহারথযাত্রা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে প্রচণ্ড উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে এবার রথযাত্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি ভক্ত দর্শনের জন্য আসবেন। ভক্তদের এই বিশাল ভিড়ের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং সুষ্ঠু যান চলাচলের ব্যবস্থা করা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে রথযাত্রা আয়োজনের জন্য পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মন্দিরের ভিতরে এবং বাইরের নিরাপত্তা, রথের ভেতরের এবং বাইরের, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, যানজট, সমুদ্রপথের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। রথযাত্রার নিরাপত্তার জন্য ২১ জন আইপিএস এবং ১২০০ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হবে। রথযাত্রার সময় ভক্তদের সকল স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরিষবা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। বিভিন্ন স্থানে ৬৯টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ৬৪টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে ৩৭৮ জন অতিরিক্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে । আইসিইউ এবং ২৬৫টি জরুরি শয্যার ব্যবস্থার পাশাপাশি, রাজ্যে ডায়রিয়ার সংক্রমণ রোধে সরকার সকল ব্যবস্থা করেছে। বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য ২০ লক্ষ জলের বোতল সরবরাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- জমজমাট দিঘা, আগামিকালের রথযাত্রা নিয়ে দুরন্ত পরিকল্পনা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী