Junior Doctor Protest: আরজি করের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ খুনের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন চলছে। এর মধ্যে গতকাল রাত্রের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। পাশাপাশি ইতিমধ্যে দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরজি করে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাতেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তদন্ত প্রক্রিয়ার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেরিতে FIR সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে।
শনিবার এই মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩। এদিকে চিকিৎসক ধর্ষণ করেও সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হওয়ায় উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ যে শুরু থেকেই ঠিক ছিল, তা খুনের মামলাতে সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারিতে স্পষ্ট হল।
তকাল জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনাস্থলে গিয়ে হাজির হান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে যেতে অনুরোধ করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মতো তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। তবে শেষমেষ সেই বৈঠকও ভেস্তে যায়।
অচলাবস্থা কিছুতেই কাটছে না। গতকাল সন্ধেয় সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে বাসে করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছে যান জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে জুনিয়র ডাক্তারদের জানিয়েছেন, বৈঠকের ভিডিও পর্ব সরকারিভাবে করা হবে। বৈঠকের মিনিটস তৈরি করে দেওয়া হবে এবং তাতে দু'পক্ষেরই সই থাকবে। পাশাপাশি তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের বলেন, যদি বৈঠক না করতে চাও ভিতরে এসে এক কাপ চা খেয়ে যাও। যদিও শেষেমেষ মমতার সেই অনুরোধের সাড়া দেন নি জুনিয়র ডাক্তাররা।
'ঘটনার দিন সন্দীপ-টালা থানার OC বারবার কথা', বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত CBI-এর
জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয় তারা অপেক্ষা করেছিলেন বৈঠকের জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরের ভিতরে ঢুকে যাওয়ার পর নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিছুক্ষণ পরেই স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাইরে বেরিয়ে এসে আন্দোলনকারীদের জানান, তাঁরা শুধু মিনিটস দিতেই রাজি আছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরাও বৈঠকে বসতে রাজি, আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে তাঁরা তৈরি।
নিয়র ডাক্তারদের দাবি, এরপরেই কেন্দ্রীয় ভট্টাচার্য জানান, আজ আর বৈঠক হবে না। রাত ন'টা নাগাদ একে একে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শুরু করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলার পর আমরা কার্যবিবরণীতে সই করেই বৈঠকে রাজি ছিলাম। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন আর বৈঠক সম্ভব নয়। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করা হয়েছে। বললেন তোমরা চলে যাও।"
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর এই কথায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের অনেকে কান্নাতেও ভেঙে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য তাঁরা এদিন ঘন্টার পর ঘন্টা তাঁর বাড়ির সামনে অপেক্ষা করেছেন। অঝোর ধারায় বৃষ্টিতে ভিজেও তাঁরা শুধুমাত্র বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। সেই বৈঠকের পরিবেশ তৈরি হওয়ার পরেও শেষমেষ ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ জুনিয়র চিকিৎসকরা। এরপর স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে স্লোগান তোলা হয় " তোমার চা তুমি খাও, আমার দুর্গার বিচার দাও"।
পুজোর আগে বঙ্গবাসীকে বিরাট উপহার মোদীর, তিন নতুন বন্দে ভারত পেল বাংলা
পাশাপাশি গত ১৪ সেপ্টেম্বর আরও এক রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়। সেখান থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা স্লোগান তুলেছেন 'আর্জি নয়, দাবি কর' । এর সঙ্গে গত মঙ্গলবার জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে উঠেছে একের পর এক স্লোগান। তার মধ্যে যেমন রয়েছে "বাজছে কাঁসর বাজছে ঢাক, তিলোত্তমা বিচার পাক"। তেমনই রয়েছে "বিচার আর কতদূর জবাব দাও চন্দ্রচূড়" । পাশাপাশি পুলিশ কমিশনরকে লক্ষ্য করে স্লোগানে বলা হয়েছে, "ভোর হল দোর খোলো বিনীত গোয়েল ওঠ রে দাঁড়িয়ে আছে হাওয়াই চটি আস্তে করে চাটো রে"। বাদ দেওয়া হয়নি কপিল সিব্বলকেও। তাকে উদ্দেশ্যে করে স্লোগান তোলা হয়, "সাদা চুল কালো কোট কপিল সিব্বল ছোট লোক"। এর সঙ্গে থ্রেট কালচার, স্বাস্থ্য সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বলা হয়, "থ্রেট কালচার কার দার স্বাস্থ্য ভবন হায় হায়", সিন্ডিকেটের গালে গালে চটি মারো তালে তালে তাইতো বলি স্টেথো ছাড়ো ঝাঁটা ধরো স্বাস্থ্য ভবন সাফাই করো" ।