Junior Doctor's Movement: স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। নবান্নে বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। আর সেই নিগমকেই অভিযুক্ত বলায় আপত্তি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তাররা বৈঠকে বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। আপনি প্রমাণ চেয়েছেন। স্যরের হাত দিয়ে বেশ কিছু চিঠি বেরিয়েছে।’’ মমতা তাঁদের থামিয়ে বলেন, ‘‘একটা মানুষ অভিযুক্ত কি না, প্রমাণ না পেলে তাঁকে অভিযুক্ত করা যায় না।’’ আন্দোলনকারী এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘দোষ প্রমাণের আগে তাঁকে দোষী বলা যাবে না। তবে অভিযুক্ত বলা যেতে পারে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি মানেননি।
বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যৌন হেনস্থার অভিযোগের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘আরজি করের মতো দ্বিতীয় ঘটনা যাতে না হয়, তা দেখা হোক। মেয়েদের নিরাপত্তার জায়গাটা দেখা হোক।’’ তাঁর দাবি, ‘থ্রেট কালচার’-এর পাশাপাশি যৌন হেনস্থাও চলে। ডাক্তারি পড়তে আসা ছেলে-মেয়েদের কী করুণ অবস্থা তা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বিস্তারিত জানান অনিকেত।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে বলতে বলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ধরে ধরে উত্তর দেন মুখ্যসচিব। পন্থ বলেন, 'ইতিমধ্যে দাবির অনেক কাজ এগিয়েছে। প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজে যাতে সুস্থ, ভয়মুক্ত, নিরাপদ পরিবেশ থাকে, তা আমাদেরও চেষ্টা। আমরা রাজ্যস্তরে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছি। গ্রিভ্যান্স রিড্রেসল সেল গঠন করা হয়েছে। ই-মেল আইডি দিয়েছি, যেখানে আপনারা অভিযোগ জানাতে পারবেন।'
মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে মুখ্যসচিব জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তিনি আরও জানান, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের চেষ্টা করছে রাজ্য। এদিন মেডিক্যাল কলেজগুলির অধ্যক্ষদের তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, অনেক অধ্যক্ষ, 'সুপার নিজেদের কাজ করেন না। তোমাদের সঙ্গে আমি একমত। তাঁরা রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন।'
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে হুমকি সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্তদের সাসপেনশন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন করেন, "আরজি করের প্রিন্সিপাল কেন ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করলেন কেন? কী ভাবে নিজে সিদ্ধান্ত নিলেন? রাজ্য সরকারকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না? এটা থ্রেট কালচার নয়? তদন্ত না করে কাউকে সাসপেন্ড নয়। ইচ্ছে মতো কাজ করবেন না। কেউ কাউকে থ্রেট করবেন না। আমি ক্ষমতায় বলে থ্রেট করতে পারি না।" এই মন্তব্যের পাল্টা অনিকেত মাহাতো বলেন, 'কমিটি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পর সাসপেন্ড করা হয়েছে।' এই নিয়ে অনিকেতের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাও মমতা বলেন, প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘কোনও আলোচনা না করে সাসপেন্ড কেন?"
আরও পড়ুন দাবি আদায়ে নাছোড় আন্দোলনে জুনিয়র ডাক্তাররা, আজ ফের নবান্নে বৈঠক, কাটবে জট?
আরও পড়ুন দেবাশিস হালদার, অনিকেত মাহাতোদের বিরুদ্ধে FIR দায়েরের নিদান কুণালের, পাল্টা সোচ্চার কিঞ্জল