কচুয়ায় লোকনাথ মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে দুর্ঘটনার দায় মন্দির কর্তৃপক্ষের উপরই চাপালেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দুর্ঘটনার পর শুক্রবার মন্দির পরিদর্শন করে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘প্রশাসনের অনেক নির্দেশ মন্দির কমিটি শোনেনি। প্রশাসনের সঙ্গে মন্দির কমিটির বরাবরই গ্যাপ ছিল। আজ পর্যন্ত ওঁরা প্রশাসনের কথা মতো কাজ করেননি। এবার বলছে, ওঁরা প্রশাসনের কথা মতোই কাজ করবে’’। অন্যদিকে, মন্দিরে ঢোকার পথে অস্থায়ী দোকানের পরিবর্তে ট্রলি করে দোকান করারও পরামর্শ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দোষী থাকলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’’।
এদিকে, মন্দির কমিটির সদস্য সুবীর মল্লিক বলেন, ‘‘কাল রাতে দুটো-আড়াইটে নাগাদ খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় লোক দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। বৃষ্টি থামতেই একসঙ্গে সবাই মন্দিরের পথে রওনা দেন। সে সময়ই হুড়োহুড়িতে দুর্ঘটনা ঘটে। ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। অস্থায়ী দোকানগুলি প্রথমে ভেঙে পড়ে...এত লোক আগে কখনও দেখিনি’’। তবে প্রশাসনের নির্দেশ মানা হয়নি বলে মন্ত্রীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সুবীরবাবু বরং জানান, দুর্ঘটনা নিয়ে বৈঠকে বসবে মন্দির কমিটি। আগামী দিনে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়েই আলোচনা চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কচুয়ার লোকনাথধাম মন্দিরে দুর্ঘটনা, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ৫ পুণ্যার্থীর
আরও পড়ুন: ‘হারিয়ে গেছে গণতন্ত্র’, চিদাম্বরমের গ্রেফতারিতে কাব্য প্রতিবাদ মমতার
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোররাতে কচুয়াধামে লোকনাথ মন্দির চত্বরে পদপিষ্ট হয়ে এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিন সকালেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও এসএসকেএম হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত ও আহতদের পরিবারপিছু আর্থিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই কচুয়াতে যান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিন সকালে কচুয়াতে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিজি। অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মী মিজানুর হোসেন বলেন, ‘‘কাল রাতে যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে, সে সময় আমাদের ১০ জন সদস্য ছিলেন। ১০০ জনের মতো মানুষকে পুকুর থেকে উদ্ধার করা গিয়েছে তা না হলে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত’’। এ ঘটনার পর আজ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪০ জন সদস্যকে মন্দিরে আনা হয়েছে। মিজানুরের ইঙ্গিত, রাতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আরও কর্মী থাকলে হয়তো উদ্ধারকাজ আরও সহজ হত। এদিকে, মন্দিরে পুলিশি ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত ছিল না বলেও অভিযোগ উঠেছে।