Kali Puja 2024: সিদ্ধায়ু ভৈরবের আগমন ঘটে শতবর্ষ প্রাচীন মালদার রতুয়ার গোবরজনা কালীবাড়িতে। আর সেই সিদ্ধায়ু ভৈরবের দর্শন পেতেই লক্ষাধিক ভক্তেরা ছুটে যান গোবরজনা কালী মন্দিরে (Gobarjona Kali Mondir)। কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে পুজোর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে একনাগাড় চলে পাঁঠা বলি। মন্দির থেকে অন্তত ৩০০ মিটার দূরে রক্ত কালিন্দী নদীতে যতক্ষণ না মিশে যাচ্ছে ততক্ষণ থামে না পাঁঠা বলি। তার সাথে চালকুমড়ো, পায়রা বলিরও প্রচলন রয়েছে।
যদিও এক সময় বাছুর, মহিষের বলি দেওয়ার প্রচলন ছিল কালীমন্দিরে। কিন্তু বর্তমানে তা আর হয় না। মালদার চাঁচোল মহাকুমার রতুয়া ২ ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো গোবরজনা কালী মন্দিরের পুজো আজও ভক্তদের কাছে জাগ্রত বলেই প্রচলিত রয়েছে। পুজোর রাতে আলৌকিক ছটা নাকি বেরিয়ে আসে দেবী মাথার শরীর থেকে। মা নাকি কখনও হাসেন, আবার কখনও চোখ বেড়ে গড়ায় জল। এমনই নানা কাহিনী প্রচলিত এই গোবরজনা কালী পুজোকে (Kali Puja 2024) কেন্দ্র করে। প্রাণ ভরে দেবী কালী মাতার কাছে মানত করলে কেউ আজ পর্যন্ত বিমুখ হয়ে যাননি, এমনই দাবি গ্রামবাসীদের।
স্থানীয় প্রবীণদের কথায়, গোবরজনা কালীবাড়িতে অমাবস্যায় কালীপুজোর রাতে সিদ্ধায়ু পুরুষ ও তন্ত্র সাধক এবং ভৈরবের আগমন ঘটে। এই মন্দির সংলগ্ন এলাকার পাশেই রয়েছে শ্মশান। সেখানেই নাকি অনেকেই কালীপুজোর রাতে সিদ্ধ পুরুষের দর্শন পেয়েছেন। রতুয়া ২ ব্লকের গোবরজনা কালী মন্দির কমিটির সঙ্গে ইতিমধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের বৈঠক হয়েছে। কারণ, কালীপুজোর দিন ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় হয় মন্দিরে। গোবরজনা কালীবাড়িতে পরিবারের সুখ, শান্তি, সন্তান লাভের জন্যই ভক্তেরা ছুটে আসেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। মনস্কামনা পূর্ণ হলেই পাঁঠা, কুমড়ো, পায়রাবলি দিয়ে থাকেন ভক্তরা।
গোবরজোনা কালীবাড়ির সেবাইত শ্যামাপদ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই গোবরজোনা কালী পুজো করে আসছেন চৌধুরী পরিবার। পুরনো রীতি মেনেই কালীপুজোর দিন কাঁধে করে নিয়ে মন্দিরের নিয়ে আসেন মাকে। তারপর পুজপাঠের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পাঁঠা বলি। এলাকার প্রবীণদের কথায়, গোবরজনা শ্মশানে একটা সময় নাকি সিদ্ধপুরুষ মাধব সন্ন্যাসী (যা ঘন্টি বাবা) নামে পরিচিত, মহাদেব এবং কালীমায়ের দর্শন পেয়েছিলেন। এই কালী মন্দিরের পাশে একটি প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দির আছে। ঘণ্টি বাবা দেহত্যাগ করার পরে তার নামেই মন্দির এবং একটি মূর্তি ও তৈরি করেছেন ভক্তেরা। বহু বছর আগে সিদ্ধায়ু পুরুষ ঘণ্টিবাবাই নাকি গোবরজনা কালী বাড়ির নামকরণ করেছিলেন।