/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/14/cats-2025-09-14-18-23-15.jpg)
নোয়া খোলা নিয়ে বচসা
সবে মাসখানেক আগে বিয়ে হয়েছে। এরই মধ্যে আজ, রবিবার এসএসসি একাদশ-দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে হাত থেকে নোয়া খোলার তীব্র প্রতিবাদ করলেন এক পরীক্ষার্থী। এই নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের সামনে তর্কবিতর্ক বেধে যায়। এদিন ঘটনাটি ঘটেছে কালনা হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ে। গৃহবধূ মনীষা সিকদার হাতে থাকা ধাতব নোয়া খুলে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার ’ফরমান’ মানতে অস্বীকার করেন। মনীষা তখন জানান, তিনি শিক্ষকতার চাকরির পরীক্ষা দেবেন না। বাড়ি চলে যাচ্ছেন। এমন ঘটনা চাক্ষুষ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকা সকলেই হতবাক হন।
এসএসসি-র নিয়ম অনুসারে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে ধাতব সামগ্রী খোলার বাধ্যতামূলক। এমনটা জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্। সেই নির্দেশ মেনেই পরীক্ষাকেন্দ্রে আগত ওই পরীক্ষার্থীকে হাতের নোয়া খুলতে বলায় তিনি তা অস্বীকার করেন। নিয়ম না মানায় শেষমেষ তিনি পরীক্ষা না দিয়েই কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়ে দেন। যদিও পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কোনও প্রার্থী পরীক্ষা না দিয়ে ফিরে গিয়েছেন কিনা তাঁদের কাছে তেমন কোনও খবর নেই।
পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে মনীষা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ’আমার একমাস বিয়ে হয়েছে। আমার হাতে নোয়া আছে। পরীক্ষা দেওয়ার সঙ্গে হাতের নোয়ার কি সম্পর্ক আছে, যে নোয়া খুলে রেখে পরীক্ষা দিতে যেতে হবে? আমি আমার হাত থেকে নোয়া খুলবো না, পরীক্ষাও দেব না।” যদিও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফাল্গুনী মল্লিক জানান, এরকম অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি। তবে প্রধান শিক্ষিকা কোনও অভিযোগ না পাওয়ার কথা বললেও ’নোয়া’ বিতর্ক ঘিরে নিরাপত্তা বিধি ও সামাজিক বিশ্বাসের ভারসাম্য নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে উঠেছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যে অবাধ আশ্রয় বিহারের দুষ্কৃতিদের? মেয়রের কথা বাড়ল জল্পনা, কোথায় নজরদারি উঠছে প্রশ্ন
পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে আগে থেকেই জানানো হয়েছিল, কোনও ধাতব সামগ্রী নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন ওই পরীক্ষার্থী। তাঁর দেখাদেখি আরও কয়েকজন পরীক্ষার্থী প্রথমে আপত্তি তুললেও পরে নিয়ম মেনে নোয়া খুলে পরীক্ষায় বসেন। ওই কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩৯৭ জন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনীষার পরিবার প্রশ্ন তুলেছে, “সধবা মেয়েদের শাঁখা-নোয়া খোলা কেন বাধ্যতামূলক?”
আরও পড়ুন-ভ্রমণ বিপ্লব! রেলের মুকুটে জুড়ল নয়া পালক, কলকাতা থেকে সোজা পাড়ি মিজোরাম
এদিকে নোয়া খোলা নিয়ে যে বিতর্ক হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছে কালনা মহকুমা প্রশাসন। কালনার মহকুমা শাসক(SDO) শুভম আগরওয়াল বলেছেন, “কেউ পরীক্ষা দিতে পারেনি, আমি বলতে পারবো না। তবে ধাতব নোয়া হাতে থাকা মহিলা পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে চাওয়া নিয়ে এদিন সকালে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তা নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অসন্তোষ ছড়ায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে রিজিওনাল এসএসসি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ,তারা হাতে নোয়া থাকা মহিলাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশে কোনও বাধা না করার কথা জানান। তার পর সবাইকেই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়।“
এই নোয়া বিতর্ক ঘিরে নিরাপত্তা বিধি ও সামাজিক বিশ্বাসের ভারসাম্য নিয়ে এলাকায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।