সিবিআই তাঁর হাতে এখনই হাতকড়া পরাতে পারবে না, সুপ্রিম কোর্টের এ নির্দেশের পর খানিকটা স্বস্তি মিললেও, বিড়ম্বনা কাটছে না রাজীব কুমারের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না মঞ্চে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রোষের শিকার হতে হল কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সার্ভিস রুল ভাঙার অভিযোগে নগরপালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
গত রবিবার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানা ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। খবর পাওয়া মাত্রই লাউডন স্ট্রিটে নগরপালের বাড়িতে ছুটে যান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলন করে মমতা ঘোষণা করেন, তিনি মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসবেন। ঘোষণা মতোই কিছুক্ষণ পর সেদিন রাতে মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন মমতা। সেসময় মমতার পাশে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে কলকাতার সিপিকে। যে দৃশ্যকেই ‘তুরুপের তাস’ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
আরও পড়ুন, মোদীকে চরম আক্রমণ করে ধর্না প্রত্যাহার মমতার
৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে’কে এ নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রবিবার মেট্রো চ্যানেলে মমতার ধর্নায় রাজীব কুমারের বসে থাকার প্রসঙ্গ টেনে চিঠিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, এতে এআইএস রুলস ১৯৬৮ ও এআইএস রুলস, ১৯৬৯ ভঙ্গ করেছেন সিপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, অল ইন্ডিয়া সার্ভিস (এআইএস) রুলস, ১৯৬৮-এর ৩(১), ৫(১), ও ৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন রাজীব। চিঠিতে বলা হয়েছে, "অবিলম্বে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক রাজ্য সরকার।"
আরও পড়ুন, রাজীবের গ্রেফতারিতে সুপ্রিম নিষেধাজ্ঞা, আদালত অবমাননার নোটিস মুখ্যসচিব-ডিজি-নগরপালকে
রাজ্যক পাঠানো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও আইপিএস ও আইএএস অফিসাররা কখনই কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারেন না কিংবা কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সংসর্গে থাকতে পারেন না। কোনও রাজনৈতিক আন্দোলনেও তাঁরা যোগ দিতে পারেন না। তাঁদের পদের সম্মান বজায় রাখাটা বাধ্যতামূলক।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই চিঠি প্রসঙ্গে মঙ্গলবারই ধর্না মঞ্চে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুলিশ আসতেই পারে। রাজীব কুমার আমার ধর্না মঞ্চে আসেন নি। উনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। শুধু রাজীব কুমারের পিছনে পড়ে রয়েছে।"
সেই চিঠি
এদিকে, বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, গত রবিবার সিপির বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা এতটাই আকস্মিক ছিল যে, হাতে লেখা একটি চিঠি নিয়েই সেখানে যান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। যদিও লেটারহেড দেওয়া ছাপানো চিঠি নিয়ে যাওয়াই রীতি এক্ষেত্রে। সেরকম একটি চিঠিই সোশাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে। যদিও এ চিঠির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
Read the full story in English