Krishnagar Municipality: কসবা কাণ্ড নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বেফাঁস মন্তব্যের মাঝেই রাজ্যের তৃণমূল শাসিত এক পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব পেশ। তাতে শামিল তৃণমূলের কাউন্সিলর ছাড়াও এক কংগ্রেস ও এক নির্দল কাউন্সিলর। অবশেষে অচলাবস্থা কাটাতে জেলা প্রশাসনিক কর্তারা পুরসভার চেয়ারম্যান সহ অনাস্থা প্রস্তাব আনা কাউন্সিলরদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন। তবে এর বাইরেও একজন কাউন্সিলর এই মিটিংয়ে প্রবেশ করে অংশ গ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানের কাজকর্মে বীতশ্রদ্ধ হয়ে দলের ১৩ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন।
গত বুধবার কৃষ্ণনগর পুরসভার ১৫ জন কাউন্সিলার অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এর মধ্যে তৃণমূলের ১৩ জন, কংগ্রেসের ১ জন ও ১ জন নির্দল কাউন্সিলার এই অনাস্থায় সই করেছেন। যা নিয়ে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে চর্চা। বর্তমানে পুরসভার এই অচলাবস্থায় শহর জুড়ে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়েছে। সার্ধ শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া এই কৃষ্ণনগর পুরসভার ক্ষেত্রে যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার মোট ২৫ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন বাবুসোনা শর্মা।
তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান রীতা দাসের বিরুদ্ধে তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। স্বাভাবিকভাবে কৃষ্ণনগর পুরসভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই অবস্থায় পুর পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে শহরবাসী নাজেহাল। গোটা পরিস্থিতি কাটাতে মঙ্গলবার এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হতে বিকেল পেরিয়ে সন্ধে ছুঁয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চলে এই বৈঠক। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে ১১ জন। ২ জন অনুপস্থিত ছিলেন।
সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাউন্সিলররা যুক্তি দিয়ে বোঝায় কেন অনাস্থা আনা হচ্ছে? এই বৈঠকে উপস্থিত থাকা জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ, পুলিশ সুপার অমরনাথ কে, মহকুমাশাসক শারদ্বতী চৌধুরী সহ একাধিক আধিকারিকবৃন্দরা কাউন্সিলরদের বক্তব্য মন দিয়ে শুনেছেন। প্রশাসনিক কর্তারা পুরসভার বর্তমান অবস্থা কাটানোর কথা বলেন। তাতে এই বৈঠকে কাউন্সিলররা তাতে সায় দেন। এই সময় অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা তৃণমূলের কাউন্সিলররা বাজেট পেশ না করা, সিআইসি মিটিংয়ে আলোচনা না করে টেন্ডার পাশ করা, পিচের ড্রাম নিয়ে আর্থিক দুর্নীতি সহ একাধিক বিষয়ে তাঁরা যুক্তি দেন।
গত কয়েক বছর ধরে চলে আসা সমস্যার সুরাহার জন্য অনাস্থা প্রস্তাবে সই করা তৃণমূলের কাউন্সিলররা ৩ দিন সময় চেয়ে নেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে মিটিং করে এই বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়ে দেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এই অনাস্থায় সই করা কংগ্রেসের কাউন্সিলর শান্তশ্রী সাহা বলেন, 'স্বজনপোষণ, দুর্নীতি একইসঙ্গে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিমাতৃসুলভ আচরণ করে চলেছেন এই চেয়ারম্যান। তার জন্য আমরা অনাস্থায় সই করেছি।' গোটা পরিস্থিতিতে উদ্বেগের মধ্যে পড়া জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, 'পুরসভার পরিষেবা নিয়ে চেয়ারম্যান কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিং করেছি।'