সুদীপ্ত সেনের সারদা চিটফান্ড নিয়ে ফের হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। সারদার একটি মামলাতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ মুক্তি পেতেই সুর চড়িয়েছে সিপিএম নেতৃত্ব। শুক্রবারই সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় তোপ দেগেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। সুজনকে ব্যক্তিগত স্তরেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুণাল। তবে কুণালের কথার কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সুজন চক্রবর্তী।
কুণাল লিখেছেন, 'বিধানসভায় শূন্য পাওয়া দলের নেতা এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক হতে না পারায় অবসাদগ্রস্ত সুজন চক্রবর্তী আমার সারদার একটি মামলা থেকে অভিযোগমুক্ত হওয়া সম্পর্কে বলেছেন আমি তৃণমূলের মুখপাত্র, তাই "পুলিশের মামলা তো উঠে যাওয়ারই কথা।" অল্প বয়সে সাদা চুল। তাই সবজান্তা হাবভাব। চোখে আঙুল দাদাও বলা যায়। মামলা উঠে গেল? এত বড় মিথ্যে বললেন?' তবে এখানেই থামেননি তৃণমূলের মুখপাত্র।
তিনি যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হয়েও সারদা মামলায় বাড়তি কোনও সুযোগ নেননি সেকথা বারে বারেই বলেছেন কুণাল। তাঁর কথায়, 'আত্মহত্যার মামলাতেও রাজ্য সরকার তাঁর বিপক্ষেই ছিল। একেবারে আইন অনুযায়ী তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।' আবার মানবিক কারণে সাজা দেয়নি আদালত, তা-ও আইন মেনেই হয়েছে বলে কুণাল বলেছেন। সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।
২০১১-তে রাজ্যে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি সারা রাজ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের হাজার-হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে সারদা-সহ অন্যান্য চিটফান্ড সংস্থাগুলি। এই কেলেঙ্কারির জেরে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছিলেন চিটফান্ড কাণ্ডে। এখনও কারাগারেই আছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। সারদার গ্রুপ মিডিয়ার সিইও ছিলেন কুণাল ঘোষ। তখন পুলিশি হেনস্থার শিকারও হয়েছিলেন কুণাল।
আরও পড়ুন- কড়া নাড়ছে চতুর্থ ঢেউ? লাগাতার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আশঙ্কার পারদ চড়ছে
সারদা থেকে কারা কতটা আর্থিক সুযোগ নিয়েছেন তা নিয়ে বিস্তর তর্ক-বিতর্ক আছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, গুটিকয়েক লোকজন অল্প কিছু টাকা ফেরত পেয়েছিলেন কিন্তু অধিকাংশ আমানতকারীর টাকা লুঠ হয়ে গিয়েছে। সুজনকে উদ্দেশ্য করে কুণাল লিখেছেন, 'আপনার জেলা, আপনার শ্বশুরমশাইয়ের জেলায় সারদার জন্ম। সুদীপ্ত সেনের আদালতকে দেওয়া বয়ানে আপনাদের পার্টির নামও আছে। আপনি এখন মামলা তোলার যে কথা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আপনি আগে কৈফিয়ত দিন আপনাদের জমানায়, শ্বশুর-জামাইয়ের দাপটযুগে, আপনার জেলায় সারদা ডালপালা ছড়ালো কী করে?'
এদিকে কুণালের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সুজন চক্রবর্তী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'কুণাল তৃণমূলের একটা নেতা হয়েছে বলে আমি মনেই করি না। কুণাল ঘোষের কথার আমি কোনও প্রতিক্রিয়া দিই না। এখনও আমি কিছুই বলিনি। বলব না। কুণাল বলেই বলব না।'