Lok Sabha Election 2024-Dumdum: দমদমে ১৯৯৮ ও ১৯৯৯-এ বামেদের 'দম' বের করে দিয়েছিল BJP। পরপর দু'বার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন BJP প্রার্থী তপন শিকদার। যদিও কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল এর পিছনে কোনও তাবড় বাম নেতার প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিল। এবার কি ফের চোরাস্রোত বইছে দমদমে? এই জল্পনাও কিন্তু তীব্র। রাজ্যের আরও ৭ কেন্দ্রের সঙ্গে এখানেও নির্বাচন ১ জুন, শনিবার।
"বয়স বাড়লে প্রোডাক্টিভিটি কমে।" লোকসভার প্রার্থী ঘোষণার আগে একাধিকবার এই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্র ধরে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় থাকলেও শেষমেশ তাঁরা টিকিট পেয়েছেন। দমদমের টানা ৩ বারের সাংসদ সৌগত রায়। এবার কি জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারবেন বর্ষীয়ান এই সাংসদ?
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় জয়ী হয়েছিলেন ৫৩,০০২ ভোটে। তিনি পেয়েছিলেন ৪২.৫১ শতাংশ ভোট। বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য পেয়েছিলেন ৩৮.১১ শতাংশ ভোট। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪২.৬৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। বামফ্রন্টের আমলে ২০০৯ সালের নির্বাচনে সৌগত রায় ৪৭.০৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। বামেরা পেয়েছিল ৪৪.৯৪ শতাংশ ভোট। অন্য দিকে তপন শিকদার যে দুবার এখানে জয়ী হয়েছিলেন দু'বারই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, দু'বারই বামেরা বিজেপির থেকে ১০ শতাংশ ভোট কম পেয়েছিল। দমদম লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া কিন্তু কোনও পক্ষেই স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন- Bhangar: ভাঙড়ে ভোটের দিনে চরম অশান্তির আশঙ্কা! মারাত্মক এই কাণ্ডে তারই ইঙ্গিত?
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দমদমের ৭টি বিধানসভা এলাকার মধ্যে একমাত্র রাজারহাট গোপালপুরে এগিয়ে ছিল পদ্মশিবির, মাত্র ৭৪৩ ভোটে। খড়দহ, দমদম ও দমদম উত্তরে জোর লড়াই হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে। পানিহাটি, কামারহাটি ও বরানগরে ভাল লিড পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্য সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন দমদম উত্তরে, ৩৫,৬০৪টি। এবার এই কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী ও বিজেপির শীলভদ্র দত্ত। এই লোকসভার অন্তর্গত বরানগরে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে একসঙ্গে। বাকি ৬টি বিধানসভা আসন তৃণমূলের দখলেই রয়েছে। এই আসনগুলিতে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আছেন।
আরও পড়ুন- Digha: দিঘায় রচনার পথে সোনালী ইতিহাস! পর্যটকদের স্বার্থেই যুগান্তকারী এই সৃষ্টি আত্মপ্রকাশের পালা…
খড়দহে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, দমদম উত্তরে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কামারহাটিতে মদন মিত্র, পানিহাটিতে নির্মল ঘোষ ও দমদমে ব্রাত্য বসু। তা সত্ত্বেও দমদম লোকসভায় চোরাস্রোত বইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সিপিএম এখানে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের যে কয়েকটা আসনে সিপিএম ভালো ফল করবে বলে মনে করছে সেই তালিকায় দমদম রয়েছে। তেমন ভাবেই বিজেপিও মনে করছে গতবারও ব্যাপক লড়াই দিয়েছে তারা। এমনকী বাম আমলে পরপর দু'বার বিনা সংগঠনে এখানে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। তাঁরাও আশায় বুক বেঁধেছে।
আরও পড়ুন- Bhangar: ভাঙড়ে ভোটের দিনে চরম অশান্তির আশঙ্কা! মারাত্মক এই কাণ্ডে তারই ইঙ্গিত?
নারদা কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের। প্রথমে ভিডিওতে টাকা নিতে দেখেও অনেকের বিশ্বাস হয়নি। সেই মামলা এখনও চলছে। এদিকে বন্ধ সংস্থা জেসপের কর্মীদের বড় অংশ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করলেও লোকসভা নির্বাচনের সময় তাঁরাও ভোট নিয়ে মনস্থির করতে পারেননি বলেই শোনা গিয়েছে। এবার তৃণমূল ও বিজেপির লড়াইয়ের মাঝে নেপোয় আবার দই মারবে না তো? তা নিয়েও জোর গুঞ্জন চলছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, দমদমের এবারের লড়াই খুব সহজ নয়।