/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/17/vHsmFpsFgfgXTdHFrizI.jpg)
প্রতীকী ছবি
Malda Death: রহস্যজনকভাবে একই পরিবারের শাশুড়ি, পুত্রবধূ এবং নাতনির মৃত্যুর ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়াল। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাড়ির গৃহকর্তাও। বৃহস্পতিবার রাতে দফায় দফায় ওই পরিবারের একজন বালিকা সহ দুই মহিলার মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে বৈষ্ণবনগর থানার কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চকবাহাদুরপুর এলাকায়। এই ঘটনার পর রীতিমতো গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে মৃতের পরিবারের তদন্তে পৌঁছায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। যদিও মৃতের পরিবারের অভিযোগ এই চকবাহাদুরপুর এলাকাটি কয়েক দিন ধরে গঙ্গার নদীর জলে প্লাবিত রয়েছে। তাদেরকে বন্যায় ডুবে থাকা নলকূপের জলই খেতে হচ্ছে। সেই জল খাওয়ার পরেই শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে।
যদিও এমন দাবি মানতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর । মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ওই এলাকায় আরও অনেক পরিবার রয়েছে। সেখানেও নদীর জল প্লাবিত হয়েছে এবং নলকূপ ডুবে রয়েছে। এই ধরনের ঘটনা শুধু ওই পরিবারটির ক্ষেত্রে কিভাবে হলো।
আরও পড়ুন- 'কংগ্রেসের পরিকল্পনা প্যাকেজিং করে মার্কেটে ছাড়ছেন', নয়া মেট্রোপথের উদ্বোধন নিয়ে মোদীকে কটাক্ষ অধীরের
তাহলে আশেপাশের মানুষও পানীয় জলের সংক্রমণ থেকে অসুস্থ হতে পারতো। কিন্তু তেমনটা হয় নি। যদিও প্রকৃত মৃত্যুর কারণ ময়না তদন্তের পর রিপোর্ট পেলে পুলিশ জানাতে পারবে। পাশাপাশি যা মনে করা হয়েছে ওই পরিবারের রাতের খাওয়ারের থেকেও কোন সমস্যা তৈরি হতে পারে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন পুষ্প মণ্ডল(৬৫), তার পুত্রবধূ বুল্টি মণ্ডল(৩৫) এবং নাতনা পিউ মণ্ডল (১০)। অসুস্থ রয়েছেন স্বপন মন্ডল (৪৪) তিনি চিকিৎসাধীন মালদা মেডিকেল কলেজে। বাড়িতেই চারজন একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বৈষ্ণবনগরের বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে।
তবে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় চিকিৎসকরা তাঁদের মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। মালদা মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পথে পিউ মণ্ডল (১০) মারা যায়। অপর দু’জনকে মালদা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। তাঁরাও রাতে মারা যায়। পরিবারের পাশাপাশি পুলিশেরও প্রাথমিক অনুমান, বিষক্রিয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
মৃত বুল্টির স্বামী স্বপন মন্ডল বলেন, দুপুর থেকেই বাড়ির সকলেই অসুস্থ বোধ করছিল। যদিও রাতে মাংস ভাত খেয়েছিল সকলেই। কিন্তু তার আগে থেকেই শরীরের ব্যথা ও চুলকানি হচ্ছিল। এরপরেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ি। আত্মীয়-স্বজনেরা আমাদের প্রথমে বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে তিনজনের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে মেডিকেল কলেজের রেফার করা হয়। পথে মৃত্যু হয় মেয়ে এবং মায়ের এরপর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা চলাকালীন স্ত্রীর মৃত্যু হয়। আমাদের ধারণা প্লাবিত এলাকায় নলকূপগুলি ডুবে থাকার জন্যই বিষক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সেই জল পান করেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় এলাকার তৃণমূল দলের সদস্য হৃদয় মন্ডল বলেন, ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে ওদের যুক্তির সঙ্গে এই ঘটনার কোনো মিল নেই। যদি এমনটা হতো তাহলে আশেপাশের লোকও ডায়েরিয়া বা অন্য কোন সংক্রমনে অসুস্থ হতে পারতো। কিন্তু তেমনটা হয় নি। শুধুমাত্র ওই পরিবারটির ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুরো বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে।
মালদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পার্থ প্রতিম মুখার্জি জানিয়েছেন, অসুস্থেরা শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা নিয়েই মেডিকেল কলেজের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। এখানে সংক্রমণজনিত কোনো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা যায় নি। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তে রিপোর্টের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বলা সম্ভব।পাশাপাশি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।