Malda Love Zihad: প্রেমিকের টানে কাঁটা তারবিহীন সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে প্রবেশ করতে গিয়ে বিজিবি'র (বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশ) হাতে ধরা পড়ল মালদার বামনগোলা থানা এলাকার এক যুবতী। বিষয়টি জানাজানি হতে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত বামনগোলা থানার গোবিন্দপুর মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিমপুর এলাকায়। গত বুধবার বাড়ির লোকেদের চোখে ধুলো দিয়ে ওই যুবতী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বলে অভিযোগ। এরপর শুক্রবার সকালে নিখোঁজ ওই যুবতীর মা ললিতা সরকার বামনগোলা থানায় সমস্ত ঘটনার বিষয়টি তুলে ধরে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ললিতাদেবীর অভিযোগ, তার মেয়ে নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েই চোরা পথে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। এখন বাংলাদেশের পুলিশ মেয়েকে আটকে নির্যাতন করছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ওই যুবতীর পরিবার। আর এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপি উত্তর মালদা সংগঠনিক সহ-সভাপতি বীনা কীর্তনীয়া বলেন, মালদার ভারত - বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে রয়েছে। 'লাভ জেহাদের' নাম করে এই যুবতীকে পাচার করা হচ্ছিল। এই রাজ্যের পুলিশের উদাসীনতার কারণেই এই এলাকায় পাচার চক্র সক্রিয় আছে দীর্ঘদিন ধরে। পাল্টা বামনগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য অশোক সরকার বলেন, সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব বিএসএফের। কিভাবে এই যুবতী সীমান্ত পার করলো এর জবাব বিএসএফকে দিতে হবে। বিজেপির মুখে এসব মানায় না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকুয়াহাট ডিগ্রী কলেজ থেকে স্নাতকস্তর অধ্যায় সম্পন্ন করার পর বিভিন্ন কাজের সন্ধান করছিল বামনগোলার থানার গোবিন্দপুর মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিমপুর এলাকার যুবতী অর্চনা সরকার । কিন্তু রহস্যজনকভাবে গত বুধবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় । এরপরই বৃহস্পতিবার থেকেই ওই যুবতী তার মায়ের মোবাইলে ক্রমাগত ফোন করে জানায় বাংলাদেশে পুলিশের হাতে আটকে থাকার কথা। সেখানকার পুলিশ কিভাবে নির্যাতন করছে, সে কোথাও জানিয়েছে ওই যুবতী। ললিতাদেবীর অভিযোগ, বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার সপাহার থানার বামনপাড়া এলাকার সীমান্তের বিজিবি তার মেয়েকে আটক করেছে। এরপর তারা বাংলাদেশের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানেই তার মেয়ের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ললিতাদেবীর বক্তব্য, নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েই তার মেয়েকে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বামনগোলা থানার কাশিমপুর এলাকার ওই কলেজ ছাত্রী অর্চনা সরকার সোশ্যাল মাধ্যম ব্যবহার করে কোনও এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। গত বুধবার রাতেই বাড়ির লোকেদের অজান্তেই ওই যুবকের সঙ্গেই পালিয়ে যায় সে। এর পরই বৃহস্পতিবার ওই যুবতী বাংলাদেশের বিজেপির হাতে ধরা পড়ার বিষয়টি মোবাইলে ফোন করে তার পরিবারকে জানাই। আর তারপর থেকে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই যুবতীর পরিবার। ওই যুবতীর মা ললিতাদেবী বলেন, তার স্বামী তসর সরকার ভিন রাজ্যের দিনমজুরি করেন। বাড়ির একমাত্র মেয়ে নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েই বাংলাদেশ ঢুকে পড়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তপন থানার সীমান্তবর্তী কোনও একটি কাঁটাতারবিহীন জায়গা দিয়েই তাঁর মেয়েকে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এখন প্রশাসনের ওপরই ভরসা করে রয়েছেন তাঁরা। যদিও এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।