Malda News: বুধবার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। ধুমধাম করে সাতসকালে চলে এসেছিল ব্যান্ড পার্টির দল। বাড়িভর্তি ছিল আত্মীয়-স্বজনেরা। গায়ে হলুদ মাখানোর জন্য পাত্রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে সেই হবু পাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি আম বাগানে।
ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার সাটটারি মোবারকপুর এলাকায়। বিয়ের দিন সকালে পাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো শোকে ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকেরা। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে তদন্তে পৌঁছায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বিনয় মণ্ডল (৩০)। তাঁর সঙ্গে ইংরেজবাজারের খাসকোল এলাকার পাত্রী প্রিয়া মণ্ডলের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বুধবারই ছিল বিয়ে। কিন্তু বিয়ের দিনই ওই পাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পাত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন মৃতের পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের বাবা ধরণী মণ্ডল মা সীতাদেবী দীর্ঘদিন আগেই মারা গিয়েছেন। বিনয়রা তিন বোন, দুই ভাই। বড় দিদি, তানিয়া মণ্ডলের কাছে খাওয়া-দাওয়া করতেন বিনয়। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে ভিন রাজ্যে কাজ করতেন বিনয়।
আরও পড়ুন ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় আরও এক গ্রেফতার, উদ্ধার প্রচুর সিম কার্ড-পেনড্রাইভ-এটিএম কার্ড
মৃতের এক জামাইবাবু হেমন্ত মণ্ডল জানিয়েছেন, 'গত সোমবার খাসকোলের পাত্রীর বাড়িতে গিয়ে আমরা রেজিস্ট্রি করে আসি। সেই সময় পাত্রী রেজিস্ট্রি করতে গড়িমসি করছিল। তখনই সন্দেহ হয়েছিল। যেহেতু ঘটকের মাধ্যমে পাত্রী পছন্দ হয়েছিল, তাই তখন কিছু বলেনি। এরপরই আমার শ্যালককে পাত্রীর বাড়ির লোকেরা এক ঘন্টা ধরে আটকে রেখে কিছু বুঝিয়েছিল। সেই সময় আমি পাত্রীর অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে বাইরে কথা বলছিলাম। পাত্রীর বিষয় নিয়ে কী কথা হয়েছিল সেটা অবশ্য শ্যালক বাড়িতে এসে বলেনি। মঙ্গলবার বিয়ের বাজারের সমস্ত আয়োজন করে ফেলেছিলাম। বুধবার ধুমধাম করে বিয়ে করতে যাবে শ্যালক, সেই আনন্দেই ছিলাম। কিন্তু সকাল থেকেই বিনয়কে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। এরপরই বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে শ্যালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।'
আরও পড়ুন 'চরম পরিণতির জন্য তৈরি থাকুন', চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারিতে বাংলাদেশ সরকারকে হুংকার শুভেন্দুর!
মৃতের এক দিদি ত্রিপলা মণ্ডল বলেন, 'আমার ভাই খাসকোলের ওই মেয়েটিকে পছন্দ করেছিল। কিন্তু ওই মেয়েটির অন্য কোথাও সম্পর্কে লিপ্ত ছিল, সেটা আমার ভাইকে রেজিস্ট্রি হওয়ার পর মোবাইলে ছবি দেখিয়ে বলেছিল। বিয়ের এত আয়োজন করে অবশেষে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল ভাই। বিয়ে ঠিক করার আগে যদি এ সব বলতো তাহলে হয়তো ভাইকে আত্মহত্যা করতে হত না।'
এই ঘটনার পিছনে পাত্রীর পরিবারের প্ররোচনার অভিযোগ তুলে পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।