Malda TMC Leader Murder Case: তখন সকাল পৌনে দশটা। মনে হচ্ছিল যেন কাকুকে কেউ ফলো করছে মোটরবাইকে। কাকু তখন গাড়ির পিছনে সিটে বসে আছেন। কানির মোড় থেকে সোজাসুজি স্টেশনের যাওয়ার রোড ধরেই মহানন্দাপল্লীর প্লাইউডের দোকানে চার চাকার গাড়িতে করে বাবলাকাকুকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কানিরমোড়ের কার্যালয় থেকে দাদার দোকানের দূরত্ব প্রায় দু কিলোমিটার হবে। একটা মোটর বাইক মুখ ঢাকা চারজন বারবার গাড়ির দিকে লক্ষ্য করছিল। গাড়ির লুকিং গ্লাসে ওদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় । কাকুকে বলেছিলাম গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাব। আপনি নামবেন না। অথবা বিপদ হলে বাইক ধাক্কা মেরে ফেলে দেবো। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৃত তৃণমূল নেতার গাড়ি চালক সুমন রায়। তাঁর আক্ষেপ, টকাকু যদি আমার কথা শুনতো, গাড়ি থেকে যদি না বেরতেন, তাহলে হয়তো দুষ্কৃতীদের হামলায় খুন হতে হতো না'।
বৃহস্পতিবার মেডিকেল কলেজের সামনে মৃত তৃণমূল নেতার গাড়ি চালক সুমনবাবু বলেন, 'প্রতিদিনই বাড়ি অথবা এলাকার পার্টি অফিস থেকে কাকু গাড়িতে করেই নিজের প্লাইউডের দোকান এবং গোডাউনে যেতেন। এদিনও তার ব্যাতিক্রম হয় নি। কিন্তু ওরা যে ফলো করছে ভাবতেই পারে নি। মাঝে একবার সন্দেহ হয়েছিল, তখন বলেছিলাম কাকু গাড়ি থেকে নামবেন না। মনে হচ্ছে কেউ যেন ফলো করছে। বাবলকাকু বলেছিলেন "ধুর বোকা আমাদের কেন কেউ ফলো করতে যাবে।" আমরা কার কি ক্ষতি করেছি"। তারপরেই দরজা খুলে বেড়াতেই বন্দুকদারী দুষ্কৃতীদের হামলা। তখন আর গাড়িতে ঢোকার সুযোগ পায় নি। সোজা দোকানের দিকেই দৌড়ে যেতে হয়েছে। মাথায় গুলি করে বাবলাকাকুকে মেরে ফেললো দুষ্কৃতীরা। আমি অপারক, কিছু করতে পারলাম না। সব শেষ হয়ে গেল।
গতকালই মালদায় খুন হন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। রীতিমতো রেইকি করে খুন করা হয়েছে জেল তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলাল ওরফে বাবলা সরকারকে, এমনই খবর পুলিশ সূত্রের। এখনও পর্যন্ত এই খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, উদ্ধার হয়েছে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র। ধৃতদের মধ্যে দু'জন বিহারের বাসিন্দা ও দু'জন মালদার ইংরেবাজারের বাসিন্দা।তৃণমূল নেতা বাবলা সরকার খুনের ঘটনার পর শুক্রবার শেষকৃত্য সম্পন্নের আগে বিভিন্ন জায়গায় মরদেহ রেখে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হল। শুক্রবার ইংরেজবাজার শহরের অধিকাংশ এলাকার দোকানপাট ছিল বন্ধ। এদিন মালদা মেডিকেল কলেজ থেকে তৃণমূল নেতার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় শহরের মহানন্দাপল্লী এলাকায়। তারপরে পার্টি অফিসে মৃত বাবলা সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এরপর ইংরেজবাজার পুরসভাতেও একইভাবে নিয়ে আসা হয় তৃণমূল নেতার মরদেহ। এদিন বাবলা সরকারের মৃতদেহ প্রতি শ্রদ্ধা জানান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূলের পদস্থ নেতারা।