নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে আরএসএসের কাছে আবেদন রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে সমর্থন না করার কথা বললেও রাজনৈতিক মহলের কাছে স্পষ্ট, তিনি ইঙ্গিত করেছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে। দলের সাংগঠনিক এই বৈঠকে বিজেপির বিরুদ্ধেই ক্রমাগত আক্রমণ করেছেন মমতা। অবশ্য কিছুটা জায়গা পেয়েছে সিপিএমও। কিন্তু হঠাৎ আরএসএসের কাছে এই আবেদনে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। খোদ আরএসএস নেতৃত্ব এই আবেদনের প্রেক্ষিতে কড়া ভাষায় পাল্টা আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সম্প্রতি ছট উৎসবে আরএসএসের ক্যাম্প দেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে টেনে এদিন সভামঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'আপনারা ধর্ম করুন, আমার কোনও আপত্তি নেই। আমার আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও কিছু বলার নেই। কিন্তু দেশের জন্য যে লোকটা সবচেয়ে ক্ষতিকারক তাঁকে আর সাপোর্ট দেবেন না। আপনারা বিভিন্ন সময়ে অনেককে সমর্থন করেছেন। কিন্তু এই লোকটাকে প্লিজ আর সাপোর্ট করবেন না। জগাই আর মাধাই…দেখলেই মনে হয় খেতে আসছে!' রাজনৈতিক মহলের মতে, জগাই-মাধাই আর কেউ নন মোদী ও শাহকে ইঙ্গিত করেছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। মমতা এদিন আরও বলেছেন, 'ওই পাপিষ্ঠরা মাঠে ছিল বলেই ইন্ডিয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটে হেরেছে।' এক্ষেত্রেও ইঙ্গিত যথেষ্ট বলে মনে করে অভিজ্ঞমহল। উল্লেখ্য, মোদীদের ওপর সঙ্ঘের সমর্থন রয়েছে এটা নতুন কিছু নয়।
আরও পড়ুন- পার্থ, কেষ্ট, বালু, মানিক, জেলে, ‘বদলা’র আগুনে জ্বলছেন মমতা! দিলেন ভীষণ হুঁশিয়ারি!
মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ। দক্ষিণবঙ্গ আরএসএসের প্রান্ত প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের সমর্থন করবে না, মমতা অভিষেককে সমর্থন করবে নাকি। মোদী- অমিত শাহ আরএসএসের লোক। ওঁরা আরএসএসের বাইরে নাকি। হঠাৎ আরএসএসের প্রতি ভক্তি এসে গেল কেন। রঘু ডাকাত নাকি, এখন আমি ফেঁসে গিয়েছি। কয়লা চুরি, বালি চুরি সবেতেই। এখন আর এসএস ভাল, ওঁরা ভাল না। ওইরকম হয় নাকি। পায়েস ভাল পায়েসের বাটি ভাল না। ওই সব গল্প চলবে না।' সঙ্ঘ মনে করে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না সেদিন যদি অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আদবানীরা সহযোগিতা না করতেন। সমাজের মানুষকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার কাজ করছে আরএসএস। সেই কাজটা নষ্ট করতে পারেনি এখানে। এখন দেখছে যে ধরা পড়ে যাচ্ছি।'
আরও পড়ুন- আর শুধু অভিষেক নয়, এবার দিল্লি অভিযানের নেতৃত্বে মমতা, চ্যালেঞ্জ মোদীকে!
একটা সময় সঙ্ঘ পরিবার ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে, এমন বিতর্কও চর্চায় ছিল। বিরোধীদের বক্তব্য, এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় আরএসএসের প্রশংসা শোনা গিয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। তবে আরএসএস কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলকে সমর্থন করবে না, কি ভূমিকা নেবে? কি চাইছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা নিয়েই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের লোকজনের জন্য যেন কোনও কারখানার গেট বন্ধ না হয়: মমতা