বড়বাজারে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়বাজারের মেছুয়া ফলপট্টি চত্বরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই হোটেল ঋতুরাজে অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এদিন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, মন্ত্রী শশী পাঁজা, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সহ প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকার বেশ কয়েকটি বহুতলের ভগ্নপ্রায় দশা নিয়েও ফের একবার উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।
বড়বাজারের ঋতুরাজ হোটেলের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "এমার্জেন্সিতে সব সময় বিকল্প একটা ব্যবস্থা রাখা উচিত। যারা এমার্জেন্সির ক্ষেত্রে কোনও বিকল্প রাখে না তাদেরকে ক্ষমা করা উচিত? কোথাও কোথাও আমি কিন্তু ভীষণ টাফ। এ ব্যাপারে আমি কিন্তু রাফ অ্যান্ড টাফ।" বড়বাজার এলাকার বেশ কিছু বহুতলে এখনও ভগ্নপ্রায় দশা। প্রশাসনের তরফে বারবার সেগুলি সংস্কারের কথা বলা হলেও ওই বাড়িগুলির মালিকের তরফে কোনওরকম হেলদোল দেখানো হয় না বলে অভিযোগ ওঠে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ওই এলাকার কিছু বাড়ি প্রসঙ্গে বলেন, "আপনাদের জমি-ঘর নিয়ে সমস্যা থাকতেও পারে। কিন্তু এটা বুঝতে হবে এটা জীবন মরণের প্রশ্ন। যারা সশরীরে এখানে বাস করেন তাদের সঙ্গে পুলিশ-পুরসভা কথা বলবে।" মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনও ঘটনায় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ সাহায্য করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। দল না দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Update: 'দিলীপকে রাজ্য সভাপতি পদে বসানো ভুল হয়েছিল', প্রবীণ BJP নেতার মন্তব্যে শোরগোল
বাম আমলে বড়বাজারের নন্দলাল মার্কেটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল। সেই সময় বিরোধী নেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দরাম মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বাম সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বড়বাজার এলাকার বাসিন্দাদের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, "আমি কারও বিরুদ্ধে নই। আপনারা ভালো থাকুন আমি সেটাই চাই। আমাকে ভোট না দিলে না দিন, কিন্তু দয়া করে জীবনটা বাঁচান।"
আরও পড়ুন- Hotel Fire Kolkata: পালিয়েও হল না শেষ রক্ষা! বড়বাজারের হোটেল ঋতুরাজের মালিক-ম্যানেজার গ্রেফতার
উল্লেখ্য, অক্ষয় তৃতীয়া ঠিক আগের দিন অর্থাৎ গত মঙ্গলবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে বড়বাজারের হোটেল ঋতুরাজে। ৬ তলা ওই হোটেলে আগুন ধরে যায়। অগ্নিকাণ্ডের পর কার্যত গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছিল গোটা হোটেলটি। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। প্রাণভয়ে হোটেলের কার্নিশ থেকে নিচে লাফ দিয়ে পড়েছিলেন একজন।
পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই ব্যক্তিকেও মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।মঙ্গলবার রাত ৮ টা ১৫ নাগাদ মেছুয়া ফলপট্টির কাছে হোটেল ঋতুরাজে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে পরপর একে একে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিল দমকলের ১০ ইঞ্জিন। গিয়েছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরাও। ওই হোটেল থেকেই পরবর্তী সময়ে উদ্ধার করা হয় পরপর নিথর মৃতদেহ।