Mamata Banerjee: বিহারে SIR-এর নামে ভোটার তালিকা থেকে ন্যায্য ভোটারদের নামও বাদ দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগে সরব বিরোধীরা। এই ব্যাপারে BJP-কেই দায়ী করে তুমুল প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী শিবির। রাজ্যে কোনভাবেই এনআরসি চালু হবে না হুঙ্কার ছুঁড়লেন মমতা। পাশাপাশি ভিন রাজ্যে বাঙালি বিদ্বেষ ইস্যুতে গর্জে উঠে আজ সোমবার বোলপুর থেকে 'ভাষা আন্দোলন' শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি বিদ্বেষ, বাংলা ভাষীদের উপর অত্যাচার নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের ভাষণে মমতা বলেন, “আমার ভাষা কেড়ে নিতে দেব না, বাংলার মাটি সোনার থেকেও খাঁটি”। বাংলা ভাষাভাষীদের উপর অত্যাচার ও বিভাজনের রাজনীতিতে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী।
“আমি কোনও ভাষার বিরোধী নই। বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য—এই আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।” এমনই কড়া বার্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি থেকে গুজরাট, হরিয়ানা, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র—বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি কখনও কোনও হিন্দিভাষীকে বাংলা ছাড়তে বলিনি। তাহলে বাংলা বলায় বাঙালিদের কেন বারবার অপমানিত হতে হবে?”
“বাংলায় কথা বলেন ৩০ কোটি মানুষ, তবু হেনস্থা”-মমতা
বাংলা ভাষাকে নিরন্তর অবমাননার অভিযোগ করে মমতা বলেন, “বাংলা বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষের ভাষা। তবু দিল্লিতে, হরিয়ানায়, অসমে গুজরাটে, এমনকি ওড়িশাতেও বাংলা বললেই হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। দিল্লিতেও এমন ঘটনা ঘটেছে গতকাল। একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিকে বাংলা ভাষা বলায় হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে তোপ দাগের মুখ্যমন্ত্রী।
ভোটার তালিকা ও NRC নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য
বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওরা বলছে বাংলায় দেড় কোটি রোহিঙ্গা রয়েছে, যাদের নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে। এত রোহিঙ্গা কোথা থেকে এল? গুজরাটে বসে বাংলার ভোটার তালিকা তৈরি হচ্ছে! আমি বেঁচে থাকতে NRC করতে দেব না। দরকার পড়লে জীবন দেব, কিন্তু ভাষা কেড়ে নিতে দেব না।”
“পুশব্যাক হয়েছে বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও”-মমতা
বাংলাদেশে বাঙালি পুশব্যাকের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাকে তাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও মানুষকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে। এটা কোনরকম ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”
“এই ভারতকে আমি চিনি না”—সংখ্যালঘু ও দলিতদের উপর অত্যাচারে ক্ষোভ মমতার
মহারাষ্ট্রে সংখ্যালঘুদের খুন এবং দলিতদের উপর অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, “এই ভারতকে আমি চিনি না। এ কেমন দেশ গড়ছে ওরা? সৌদি আরবে গেলে, মালদ্বীপে গেলে আপনি তো হিন্দু না মুসলমান দেখেন না? তাহলে এখানে এত বিভাজন কেন?”
“আমাদের সরকার বিভাজনে বিশ্বাস করে না”-মমতা
সোজাসুজি বিজেপির বিরুদ্ধে আঙুল তুলে মমতা বলেন, “ডবল ইঞ্জিন সরকার দেশের ভিত ধ্বংস করছে। বিরাট গেম প্ল্যান চলছে। কিন্তু বাংলার মানুষ মাথা নত করবে না। আমরা লড়তে জানি, লড়াই করে বাঁচতে জানি। দরকার হলে জীবন দেব, আমার ভাষা কেড়ে নিতে দেব না। এই সরকার ২৯ পর্যন্ত থাকবে না"।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি বাংলা ভাষা ও বাঙালি পরিচয়ের উপর হামলার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট অবস্থান। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ২৬-এর নির্বাচনের আগে বিজেপিকে কোনঠাসা করতে মরিয়া তৃণমূল শিবির।