করোনার জেরে লকডাউন পরিস্থিতিতে জনজীবন সচল রাখতে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লকডাউন চলাকালীন অত্যাবশকীয় পরিষেবা যাতে থমকে না যায়, সেদিকে বিশেষ নজর দিলেন মমতা। নবান্নে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''সব অত্যাবশকীয় পণ্যের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিতে বলছি সমস্ত থানাকে। বিডিও, এসডিও, এসপি সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে। সবজিওয়ালা, মুটেদের আটকানো যাবে না। কৃষকদের মাঠে কাজ করতে দিতে হবে। সরকারি নির্দেশিকা না মানলে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে''।
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ''হোম ডেলিভারির জন্য পাস দেওয়া হবে। বাড়িতে বাড়িতে পেপার (খবরের কাগজ) বিলিতে বাধা নেই। হকারদের কার্ড দেওয়া হবে''। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ''রেশন দোকান যেন ঠিকমতো চলে। দরকার হলে একমাসের চাল একবারে দিয়ে দেওয়া হবে। তাহলে বারবার আসতে হবে না। যাঁরা বাজারে যাবেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন''। উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় এই মুহূর্তে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর আকালের আশঙ্কায় দোকান-বাজারে ভিড় করছেন ক্রেতারা। বিভিন্ন এলাকায় জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এই প্রেক্ষিতে মমতার এহেন নির্দেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনায় মমতা সরকারের নয়া প্রকল্প ‘প্রচেষ্টা’, মিলবে আর্থিক সাহায্য়
এদিন মমতা আরও জানান, ''দু'মাসের সামাজিক ভাতা একবারে দেওয়া হবে। ফুটপাথবাসীদের জন্য নাইট শেল্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাক্তার-নার্সদের জন্য হোটেল-গেস্টহাউসে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ ক্ষুধার্ত জানলে স্থানীয় থানায় খবর দিন। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে দুটি টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে। একটা, মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে, আর একটা পুলিশের টাস্ক ফোর্স। রাজ্যে একটাই হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। টোল ফ্রি নম্বর ১০৭০ ও ল্যান্ডলাইন নম্বর ০৩৩- ২২১৪৩৫২৬। কোনও অসুবিধা হলে ফোন করলে সাহায্য পাবেন''।
আরও পড়ুন: করোনায় ২ টাকার চাল এবার বিনামূল্য়ে, ঘোষণা মমতার
করোনা আতঙ্কে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ''কেউ মেডিকেয়ার দিতে চাইলে ৯০৫১০২২০০০ নম্বরে ফোন করুন। স্টেট ইমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ডে কেউ সাহায্য করতে চাইলে, অ্যাকাউন্ট নম্বর হল ৬২৮০০৫৫০১৩৩৯, আইএফসি কোড- ICIC0006280, wb.gov.in এটা ওয়েবসাইট''।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ''কারও জ্বর হলেই সামাজিক বয়কট করা হচ্ছে, এটা করবেন না, পুলিশকে খবর দিন, পুলিশ সব ব্যবস্থা করে দেবে। জ্বর হয়েছে বলে একালায় থাকতে দেব না, খাবার দেব না, এটা করবেন না। এই ভয়ানক বার্তা যেন কেউ না দিতে পারে''।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন