Mamata VS Suvendu: বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযয়ের রাজ্যে ‘দুর্গাঙ্গন’ নির্মাণের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, সরকারি তহবিলকে কাজে লাগিয়ে ধর্ম প্রচারের 'মাধ্যম' হিসাবে এই পদক্ষেপ সাংবিধানিক নীতির লঙ্ঘন।
দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের মতই বাংলায় এবার তৈরি হবে ‘দুর্গাঙ্গন’, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে তীব্র নিশানা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি এই প্রকল্পের বৈধতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি মমতার বিরুদ্ধে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের অভিযোগ এনে সোচ্চার হয়েছেন। শুভেন্দু বলেন, "কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান - তা সে মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা গুরুদ্বার হোক - করদাতাদের টাকা দিয়ে তৈরি করা যাবে না। এই ধরণের কাজ সম্পূর্ণ অসংবিধানিক। তিনি আরও বলেন, "তিনি সংবিধান পড়েননি, এমনকি নিজের ধর্মও বোঝেন না। এই ধরনের মন্তব্য করার আগে নিজেকে শিক্ষিত হতে হবে।"
২১শে জুলাই কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবসের সমাবেশে বিশাল জনতাকে সম্বোধন করে দিঘায় জগন্নাথ ধামের পর রাজ্যে ‘দুর্গাঙ্গন’ নির্মাণের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি অভিযোগ করেছে ২৬-এর ভোটের আগে বাংলায় ধর্মীয়ভাবে রাজ্যের হিন্দু ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র রিজু দত্ত বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ঘৃণায় শুভেন্দু অন্ধ হয়ে গেছেন। রাজনীতিতে আসার আগেও তিনি আধ্যাত্মিকতায় আগ্রহী ছিলেন; তিনি বাড়িতে কালীপূজা করতেন। তিনি জগন্নাথের রূপে নারায়ণকে বাংলায় নিয়ে এসেছেন এবং জগন্নাথ ধাম নির্মাণ করেছেন। এখন তিনি মা দুর্গার মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করছেন।" হিন্দু হিসেবে কে যোগ্য তা নির্ধারণ করার মানদণ্ড বিজেপির আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।। "দুর্গাপূজোয় ক্লাবগুলিকে আর্থিক অনুদান এবং ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেতে মুখ্যমন্ত্রীর অবদানের প্রসঙ্গও তিনি টেনে আনেন। তিনি আরও বলেন, বিজেপি জগন্নাথ ধামকে 'থিম পার্ক' বলে উপহাস করছে এবং এখন বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, মানুষ তাদের বিচার করবে,"।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এর আগে দিঘা জগন্নাথ মন্দিরকে 'ধাম' বলা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তা ধর্মীয় রীতিনীতির 'বিরুদ্ধে' বলে অভিহিত করেছিলেন। এমনকি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন যে মন্দিরের গম্বুজে বজ্রপাত একটি "অশুভ লক্ষণ"। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ২৬-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ধরণের ধর্মীয় উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে সুরক্ষিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
উল্লেখ্য ১৮ জুলাই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্গাপুরে একটি জনসভায় ভাষণ রাখতে গিয়ে বক্তব্যের শুরুতেই "জয় মা দুর্গা" এবং "জয় মা কালী" তাঁর ভাষণ শুরু করেছিলেন। যাকে নিয়ে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "আগে তারা 'জয় শ্রী রাম' বলত, এখন তারা 'জয় মা দুর্গা', 'জয় মা কালী' বলছে। আমার কথা মনে রাখবেন, আগামী দশ মাসের মধ্যে তারা 'জয় বাংলা' বলা শুরু করবে।"