Bengal Flood Situation: ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) জল ছেড়ে নিজেকে বাঁচাতে চায়, আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাকে — এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিভিসি প্রায় ২৭,০০০ লক্ষ কিউবিক মিটার জল ছেড়েছে। ফলে প্লাবিত হয় বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা।”
মমতা বলেন, “আমি গত ১৪ বছর ধরে এই নিয়ে লড়াই করছি। রাজ্যের একাধিক দল, বিশেষ করে সেচ দফতরের প্রতিনিধিরা বহুবার কেন্দ্রীয় দফতরে গিয়েছেন। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছি, নীতি আয়োগ ও পূর্বাঞ্চলীয় পর্ষদের বৈঠকেও এই বিষয়ে বলেছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।” মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বন্যা মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকার কোনও ধরণের সাহায্য করছে না। বলেন, “অসম বন্যা ত্রাণের টাকা পায়, আর বাংলা পায় শুধু বন্যা। ডিভিসি জল ছেড়ে মানুষকে ডুবিয়ে দেয়, অথচ একটি কাপড় কিনে দেওয়ার জন্যও কেন্দ্র টাকা দেয় না। সব আমাদেরই করতে হয়।”
জেলাগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ
মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হুগলি, হাওড়া সহ ১০টি জেলার জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। নিচু এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুত ত্রাণ শিবির খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা শাসক (DM), পুলিশ সুপার (SP), বিডিও (BDO), ও আইসি (IC)-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে যথেষ্ট পরিমাণ খাবার, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানীয় জল মজুত থাকে।
ত্রাণে অ্যান্টি-ভেনম ও নিয়মিত নজরদারি
মমতা বলেন, “যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন চালু রাখতে হবে ত্রাণ শিবির । আমি ব্যক্তিগতভাবে কন্ট্রোল রুমে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। প্লাবিত এলাকায় অ্যান্টি-ভেনম ওষুধ মজুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”
জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান
তিনি আরও বলেন, “মানুষ সমস্যায় পড়লেও অনেক সময় মুখ খুলতে পারে না। তাই সরকার ও প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদেরই তাঁদের কাছে পৌঁছতে হবে। একজন মানুষও যাতে সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
রাজনীতির ঊর্ধ্বে সহযোগিতার আবেদন
সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মনে রাখবেন, এই বন্যা ডিভিসির জল ছাড়ার জন্য। আমাদের দলীয় কর্মীরা দিনরাত কাজ করবেন, কিন্তু এই দুর্যোগে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”