মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ী কাশফুলের বালিশ ও বালাপোশ তৈরির উদ্যোগ চলছে জোরকদমে। ইতিমধ্যে হাওড়ার সাঁকরাইলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫০ কেজি কাশফুল সংগ্রহ করা হয়েছে। কাশফুল সংগ্রহের আগে ১৬টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ট্রেনিং দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কীভাবে কাশফুল সংগ্রহ করতে হবে তা হাতে-কলমে দেখিয়েও দিয়েছেন। পরীক্ষামূলকভাবে বালিশ তৈরি সফল হলে বৃহত্তর পরিসরে এটি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাঁকরাইলের বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী কাশফুলের বালিশের কথা বলেছিলেন। পরীক্ষামূলকভাবে কাশফুলের বালিশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত কাশফুল সংগ্রহের কাজ হয়েছে।'
হাওড়ার শরৎ সদনে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে কাশফুলের বালিশের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শের কথা শুনে সেই বৈঠকেই উঠে দাঁড়িয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন শৈলেশ্বর পাণ্ডা। উলুবেড়িয়া চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি শৈলেশ্বর পাণ্ডা বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী শরৎ সদনে যখন বলেছিলেন তখন আমি উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম আমরা করতে পারি। তখন উনি বলেছিলেন দায়িত্ব নিয়ে করুন। আমরা তারপর সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিই কাশফুল থেকে বালিশ তৈরি করার। সেই কাজ চলছে হাওড়ার সাঁকরাইলে।'
সাঁকরাইলের বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বলেছিলেন তারপর আমরা চেষ্টা করছিলাম এটা নিয়ে কীভাবে এগোনো যায়। পুজোর সময় কাশফুল ফোটে তখন থেকে চেষ্টা করেছিলাম। জেলা শিল্প দফতর ও এমএসএমই দফতরের কাছে এক্সপার্ট চেয়েছিলাম। এখানে প্রচুর কাশফুল গাছও আছে আবার স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীও আছে। কীভাবে সংগ্রহ করতে হবে। ঝাড়াই-বাছাই করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা আসেন, তাঁরা ১৬টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে নিয়ে বৈঠক করেন। সবাইকে ডেকে মিটিং করে বিষয়টা বোঝানো হয়। এক্সপার্ট টিম স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের শিখিয়ে দেয় কিভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে।'
আরও পড়ুন- পাখির চোখ পঞ্চায়েত, শুভেন্দুর গড়ে ঝড় তুলতে ডিসেম্বরেই অভিষেক
হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রাজ্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। আদৌ কাশফুল দিয়ে বালিশ তৈরি করা যায় কিনা তা নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধীরা। এই সমালোচনার মধ্যে কাশফুলের বালিশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাঁকরাইলের বিডিও বলেন, 'ইতিমধ্যে ৫০ কেজি কাশফুল সংগ্রহ হয়েছে। ফুল ও ডাঁটি আলাদা করতে হবে। কান্ড দিয়ে মাদুর বা জানালার খসখস তৈরি করা যায় কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাই এই কাজ করবে। শীঘ্রই হাতে-কলমে কাজ শুরু হবে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে এটি করা হচ্ছে। এর ফলে আর্থিক সুবিধা মিললে ভেবে দেখা হবে। সফল হলে লার্জ স্কেলে উৎপাদন করা হবে।' সাঁকরাইলে রেললাইনের ধারে, গঙ্গার পাড়, বন্ধ শিল্প তালুকে প্রচুর কাশফুল ফোটে।
কাশফুল থেকে বালিশ তৈরির মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ দেওয়ার পর চরম বিতর্ক শুরু হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। পরীক্ষামূলকভাবে বালিশ তৈরির সরকারি উদ্যোগ কতটা সফল হয় সেই দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।