দুর্নীতির অভিযোগ, পাল্টা চ্যালেঞ্জ এবং দুর্নীতির খোঁজে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হানা। সংক্ষেপে গত ৭২ ঘণ্টায় রাজ্য রাজনীতির সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাপ্রবাহ এটাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিক্রি এবং এ সংক্রান্ত টাকা লেনদেনের বিষয়ে খোঁজ করতে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলা-র অন্যতম এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। সূত্রের খবর, ছবি বিক্রি করে কত টাকা পত্রিকার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে, তা জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনকেও তলব করেছে সিবিআই।
মঙ্গলবার কাঁথির জনসভায় বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন, ছবি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই বুধবার রামপুরহাটে মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় বিজেপি সভাপতির অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে পাল্টা পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেন 'মোদীবাবু'কে। মমতা বলেন, তিনি ছবি বিক্রি করে একটি টাকাও নেননি। বরং তিনি টাকা নিয়েছেন, এমনটা প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলেও জানিয়ে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই বৃহস্পতিবার ছবি বিক্রির টাকার খোঁজ করতে জাগো বাংলার অন্যতম এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই।
আরও পড়ুন- "বুধবারের প্রধানমন্ত্রী মমতা"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিক্রির টাকা কোথায় গেল, কে কে সেই ছবি কিনেছেন, টাকার উৎস কী, মূলত এসব বিষয়েই তদন্ত করছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার কালীঘাটে দেবনারায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় রোডে মানিক মজুমদারের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। জানা গিয়েছে, জাগো বাংলা-র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হলেন মোট তিন ব্যক্তি। মানিক মজুমদার তাঁদের মধ্য অন্যতম। সেই সূত্রেই এদিন তাঁকে ঘণ্টা দুয়েকের ওপর জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছবি কেন-বেচা সংক্রান্ত তথ্য জানতে চায় সিবিআই।
এই ঘটনায় এর আগে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, ছবি বিক্রি সংক্রান্ত তদন্তে ফের বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
আরও পড়ুন- লোকসভা ভোটের মুখে মায়াবতীর অস্বস্তি বাড়াল ইডি
বুধবারই ছবি বিক্রি বিতর্কে মোদী-শাহদের চ্যালেঞ্জ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "মোদী বাবু, আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি, আমি ছবি থেকে টাকা নিয়েছি, এটা প্রমাণ করুন আগে। প্রমাণ করে দেখান, যে ছবি থেকে এক পয়সাও আমার অ্যাকাউন্টে এসেছে"। শুধু নোটিস পাঠিয়ে ক্ষান্ত থাকবেন না, প্রয়োজনে মানহানির মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এর চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার দলীয় মুখপাত্রের এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় রীতিমতো গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।