Kasba Councilor Case Update: কলকাতার তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষকে গুলি করে খুনের চেষ্টা কাণ্ডের 'মাস্টার মাইন্ড'কে জালে বন্দি করল পুলিশ। বাইকে চেপে ঝাড়খণ্ডের দিকে পালানোর পথে শনিবার বিকালে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে গলসির উড়োচটি এলাকা থেকে পুলিশ তাকে পাকড়াও করে। ধৃতের নাম আফরোজ খান ওরফে গুলজার। গ্রেফতার হয়েই তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষকে 'গুণ্ডা' বলে দাবি করেন আফরোজ। তিনি এও দাবি করেন, তাঁর ২০০০ স্কোয়ার ফিট জায়গা জবরদস্তি দখল করে নিয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষের ঘনিষ্ট সহযোগী হায়দার আলি। সুশান্ত ঘোষের পিছনে সুপারি কিলার লাগানোর নেপথ্যে জমি বিবাদই মুখ্য কারণ বলে মনে করছে পুলিশ।
'সাংঘাতিক' তথ্য শুভেন্দুর হাতে? 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার' নিয়ে 'অ্যাটমবোমা' ফাটানোর তোড়জোড়!
গলসি থানায় একপ্রস্থ জেরা করে তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা জেনেছেন,কলকাতার আনন্দপুর থানা এলাকার গুলজার কলোনীতে আফরোজের জমি-বাড়ি রয়েছে। তাঁর জমির পাশেই জমি রয়েছে হায়দর আলী নামে এক ব্যক্তির। আফরোজ পুলিশকে জানিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষ একজন 'গুণ্ডা'। হায়দার তারই ঘনিষ্ট অনুগামী। এদিন আফরোজ অভিযোগে জানিয়েছেন,তাঁর জমির পাশের জায়গায় ফ্ল্যাট করতে নামে গুলজার। তখনই তাঁর ২০০০ স্কোয়ার ফিট জায়গা হায়দার আলী জোরজবস্তি দখল করে নেয়। এটা মেনে নিতে না পেরে আফরোজ তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষের দ্বারস্থ হন । কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় না। কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ তাঁর অনুগত হায়দারের এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সদর্থক কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাতে চটে গিয়ে সুশান্তকে 'শবক' শেখানোর পরিকল্পনা নিয়ে বসেন আফরোজ খান।
সেই মত আফরোজ বিহারের মুঙ্গেরের শেখ ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই ইকবাল সুপারি কিলার ভাড়া দেয়। তৃণমূল কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষকে খতম করার জন্য ইকবালের সঙ্গে ১০ লক্ষ টাকা রফা করে আফরোজ। সেই মতো দু’জন সুপারি কিলার মুঙ্গের থেকে কলকাতায় আসে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সুশান্ত ঘোষ যখন তাঁর বাড়ির কাছে বসে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বার্তা বলছিলেন তখন সুপারি কিলারদের একজন একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁকে গুলি করতে যায়। কিন্তু সুপারি কিলারের আগ্নেআস্ত্র থেকে গুলি না চলায় বরাত জোরে বেঁচে যান সুশান্তর। এলাকার লোকজন পিছু ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলে।
যুবককে অপহরণ, মোটা টাকা মুক্তিপণের দাবি, জঙ্গলে অভিযান, পুলিশের তৎপরতায় রক্ষে
সুপারি কিলার যুবরাজ ধরা পড়তেই কলকাতা পুলিশ তাঁকে জেরা শুরু করে। জেরায় পুলিশ জানতে পারে ঘটনার মূল চক্রী মহম্মদ আফরোজ খানের নাম। তার পরেই কলকাতা পুলিশ হন্যে হয়ে ঘটনার মূল চক্রী আফরোজের খোঁজ শুরু করে। আফরোজের হাওড়া দিয়ে গঙ্গাপার হওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। আফরোজের মোটর বাইকের নম্বর খুঁজে বার করে বর্ধমান পুলিশকে সতর্ক করে কলকাতা পুলিশ। বর্ধমান রেঞ্জের ডিআইজি ও বর্ধমানের পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে বার্তা পাঠান।
সেই বার্তা পাওয়ার পরেই পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে নাকা তল্লাশি করার নির্দেশ দেন থানা গুলিকে। গলসি থানার উড়োচটিতে পুলিশের নাকায় বাইক-সহ ধরা পড়ে আফরোজ। অভিযুক্ত আফরোজ বাইক নিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে পালাচ্ছিল বলে পুলিশে ধারণা। আফরোজ ধরা পড়ার খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের একটি দল সন্ধ্যায় গলসি থানায় পৌঁছে যায়। সেখানে প্রাথমিক জেরা পর্ব সেরে তাঁরা আফরোজকে কলকাতায় নিয়ে যান।