Deucha Pachami coal block:দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি নিয়ে বাইরের কিছু লোক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ WBPDCL কর্তৃপক্ষের। সম্প্রতি সল্টলেকের বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে দেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি ওই এলাকার একাধিক আদিবাসীদের সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। দেউচা-পাঁচামি নিয়ে রাজ্য সরকারের ভাবনাও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সামনে।
সল্টলেকের বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে দেউচা পাঁচামি কয়লা খনি নিয়ে ওই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পি বি সেলিম (চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডব্লিউ বি পি ডি সি এল) বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় এবং ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি দল।
পি বি সেলিম (চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডব্লিউ বি পি ডি সি এল) বলেন, "দেউচা পাঁচামি নিয়ে বাইরের কিছু লোক ভুল তথ্য দিচ্ছেন, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। সেটাকে ক্লারিফাই করার জন্য আদিবাসী যে বড় সংগঠন রয়েছে তাঁদের ১০ প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। মাইনিংয়ের টেকনিক্যাল এক্সপার্টরাও বৈঠকে ছিলেন। কীভাবে মাইনিং করার চেষ্টা হচ্ছে, দেউচা-পাঁচামি নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে সেই বিষয়গুলি পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। অনেক কিছু ভুল ধারণা, মিথ্যা ধারণা বোঝানো হয়েছে। সেগুলো পরিষ্কার করতে পেরেছি। ওখানে ওপেন কাস্ট মাইনিং হচ্ছে না, যখন এটা হচ্ছে না তখন উচ্ছেদের কোনও প্রশ্ন নেই, আপাতত ৩২৬ একরে কাজ হবে তার মধ্যে ১২ করে কাজ শুরু হয়েছে। এই ৩২৬ একরে না কোনও বসতি না কোনও জঙ্গল আছে। এখানে আন্ডারগ্রাউন্ড মাইনিং হবে। এই আন্ডারগ্রাউন্ড মাইনিং এমন হবে যাতে উচ্ছেদ না হয়। এটা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: অবশেষে মেয়ের 'ডেথ সার্টিফিকেট' পেল আরজি করের নির্যাতিতার পরিবার
অন্যদিকে, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, "আদিবাসী সংগঠনের একটা ইউনাইটেড ফোরাম আছে। তাঁদের নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তার কারণ চারিদিকে এটা নিয়ে একটা মিথ্যাচার চলছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। উচ্ছেদ হয়ে যাবে বলে আদিবাসীদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এখানে অত্যাচার হচ্ছে বলেও রটনা চলছে। এগুলো সব মিথ্যা। সেগুলো নিয়েই ইউনাইটেড ফোরাম এসেছিল আমাদের কাছে। তারা নিজেরাও প্রশ্ন করেছেন আমরা যা যা জানি যা যা করেছি সরকারের প্যাকেজ কী আছে.. যা যা সরকারি তথ্য আছে সবকিছু ওঁদের বলেছি। প্রাথমিকভাবে ৩২৬ একরে কাজ। যেখানে ১০৪ একর আমাদের ভেস্টেড ল্যান্ড আর বাকি ২২২ একর প্রাইভেট ল্যান্ড। প্রাথমিক কাজ ১২ একর দিয়ে শুরু হয়েছে। এই ৩২৬ একরের মধ্যে ফার্স্ট ফেজে কোনও বনভূমি নেই, কোথাও কোনও বসতি নেই। সুতরাং উচ্ছেদের কথা মিথ্যা। এখানে আন্ডারগ্রাউন্ড মাইনিং হবে। সেটা আমরা বুঝিয়ে বলেছি ওঁদের।"
আরও পড়ুন- Kolkata Weather Today: বেলা গড়ালেই ম্যাজিকের মত বদলাবে আবহাওয়া, কালবৈশাখী-শিলা-বৃষ্টির সম্ভাবনা একাধিক জেলায়
বৈঠক প্রসঙ্গে রামদাস কিসকু (ইউনাইটেড ফোরাম অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন কর্ণধার) বলেন, "সরকার যে কয়লা খনি করতে চাইছে সেটা ওপেন না আন্ডারগ্রাউন্ড, বিভিন্ন প্যাকেজ থেকে শুরু করে কীভাবে সবটা হচ্ছে তা জানতে এসেছিলাম আমরা। সরকারি অর্ডার সহ সরকার কী করতে চাইছে সেটা পরিষ্কারভাবে জানা ছিল না। সেটা জানার জন্যই এসেছিলাম। খনি করতে গেলে আদিবাসী উচ্ছেদ বা গ্রাম উচ্ছেদ হচ্ছে কিনা বা সরকারের কী পরিকল্পনা.. তা নিয়ে নানা কথাবার্তা শুনছিলাম। তবে সরকারি আধিকারিকরা আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। কাগজ এবং বাস্তব দুটো আলাদা, আমরা ওই এলাকায় আবার যাব। এলাকার মানুষ কী বলতে চাইছেন, ওঁনাদের বক্তব্যও শুনব। আমরা যা শুনলাম সেটাও ওঁদের বলব। তারপরে সিদ্ধান্ত হবে।"
আদিবাসী সংগঠনের আর এক নেতা বিতান চন্দ্র টুডু বলেন, "এটা ক্লিয়ার হওয়া দরকার। বাইরে যেভাবে আমরা শুনেছি, আমরা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে যেভাবে আমাদের কাছে এসেছে আর এখানে এসে যার তথ্য পাচ্ছি সেটা হচ্ছে অনেকটা ডিফারেন্স সেটা আমাদের মনে হয়েছে। সুতরাং কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক সেটা স্পটে গিয়েই আমরা বুঝতে পারব। এখানে আমরা যে নথি পেয়েছি সেই নথির সঙ্গে বাইরের মিল নেই। এই দেউচা পাঁচামি নিয়ে নানা ধরনের প্রচার বাইরে রয়েছে।"