/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/20/9zW3jrZXgTUsy0VGHewT.jpg)
purba bradhaman news: নির্বিচারে কেটে ফেলা হয় শতাধিক গাছ।
minister Siddiqullah Chowdhurys brother has been accused of cutting hundreds of trees: এবার বন দফতরকে অন্ধকারে রেখে শতাধিক গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় নাম জড়ালো খোদ রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর (Siddiqullah Chowdhury) ভাই রহমতুল্লা চৌধুরীর। সেই খবর চাউর হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) পূর্বস্থলীতে। মোটা টাকা 'জরিমানা' মিটিয়ে আপাতত নিস্কৃতি পাওয়া মন্ত্রীর ভাইয়ের সাফাই, "ভুল কাজ করে ফেলেছি।" কাটোয়া বন দফতর কর্তৃপক্ষ মন্ত্রীর ভাইয়ের 'জরিমানা' মেটানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
রীতিমতো তাঁবু খাটিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে গাছের পর গাছ কাটা চলছে পূর্বস্থলীর চৌরঙ্গি এলাকায় । ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জায়গায় থাকা অজস্র গাছ কয়েকদিনের মধ্যে কেটে ফেলা হয়। তার পরেও গাছ কাটায় বিরাম পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ে এলাকায়। তাদের মাধ্যমেই নির্বিচারে গাছ কেটে নেওয়ার খবর পৌঁছোয় স্থানীয় জাহান্নগর বন বিভাগে। অভিযোগ পেয়েই বন বিভাগের কর্মীরা পৌঁছোয় ঘটনাস্থলে। গাছ কাটার বহর দেখে বন দফতরের কর্মীদের চোখ কপালে ওঠে। গাছ কে কাটাচ্ছে, বন দফতরের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হচ্ছে কিনা, এই সব বিষয়গুলি তারা খতিয়ে দেখেন।
গাছ কাটার কাজে যুক্ত শ্রমিকরা জাহান্নগর বন বিভাগের ওই কর্মীদের জানান, কাটোয়ার রেঞ্জারের অনুমতির ভিত্তিতে গাছগুলি কাটা হচ্ছে। তবে অনুমতি পাওয়া সংক্রান্ত কোনও নথি তারা দেখাতে পারেনি। এমনকী কাটোয়া বন দফতরে বিষয়টি বারবার জানানো হলেও তারা কোনও এক কারণে উল্লেখযোগ্য কোনও তৎপরতা দেখায়নি বলে অভিযোগ জাহান্নগর বনদফতরের কর্মীদের।
আরও পড়ুন- Kolkata Fire: ফের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড কলকাতায়, দাউদাউ করে জ্বলে পুড়ে খাক তপসিয়ার ঝুপড়ি
এরই মধ্যে সামনে চলে আসে গাছ কাটার মূলে রয়েছেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুলা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী। তারপরেই এলাকাবাসী থেকে শুরু করে বন বিভাগের কর্মী মহলে হুলস্থুল পড়ে যায়। তুষার ঘোষ নামে এক ব্যক্তি ওই গাছগুলির মালিক। জাহান্নগর বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক বলেন, “৪-৫ দিন ধরে গাছ কাটা হচ্ছিল। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মীদের সেখানে পাঠাই। পরে আমিও যাই। গাছ কাটার তিনটি মেশিন তুলে নিয়ে আসা হয়। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেগুলি ফিরিয়েও দিতে হয়। মেশিন ফিরে পেয়েই ফের গাছ কাটা শুরু করে দেয়। তত দিনেও গাছ কাটার অনুমতিপত্র তারা দেখতে পারেনি। উল্টে সব মিলিয়ে শতাধিক গাছ তারা কেটে ফেলে।"
এদিকে জাহান্নগর বন বিভাগের কর্মীরা জানতে পারেন বেআইনিভাবে গাছ কাটার ঘটনায় কাটোয়ার করজগ্রামের বাসিন্দা রহমতুল্লা চৌধুরীর যোগ রয়েছে। রহমতুল্লা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই। তাই কাটোয়া বনদপ্তরের তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপে অনীহা দেখিয়েছে বলে অভিযোগ।
গাছ কাটার কাজের দায়িত্বে থাকা টুটুল শেখের কথায়, “মন্ত্রী সিদ্দিকুলা চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরীর কথায় আমরা কাজে নেমেছি। ব্যবসায়ী রহমতুলা গাছ কাটানোর অনুমতি নিয়েছেন বলেই আমরা জানি।" এদিকে সব জানাজানি হয়ে গিয়েছে বুঝতে পেরে মন্ত্রীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী বলেন,“আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। তাই দু’দিন আগে জরিমানা (ফাইন) বাবদ ২৪ হাজার ৪৪৭ টাকা আমি বন দফতরে মিটিয়ে এসেছি।"
কাটোয়ার রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা বলেন, “বন দফতরের অনুমতি না নিয়েই গাছ কাটা হচ্ছিল। এই কারণে প্রায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।” পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের প্রধান অনিন্দিতা রায় বলেন, “বন দফতরের বিনা অনুমতিতে এভাবে শতাধিক গাছ কেটে ফেলাটা ঠিক কাজ হয়নি।"