দেশের মাটি ভিজল দেশবাসীর রক্তে। না, রক্তাক্ত হিংসায় নয়। বরং প্রতীকী রক্তঋণ শোধের সাক্ষী থাকল মঙ্গলবারের চাকদা। মুখে আঁকা তেরঙ্গা । হাতেও জাতীয় পতাকা। বুকে লাগানো সাদা কাগজ। তাতে লালে লেখা ‘নো এনআরসি’। না, কোনও লাল রং ব্যবহার হয়নি। নিজেদের রক্ত দিয়ে এনআরসির বিরুদ্ধে এবার পথে নামলেন একাংশের চাকদাবাসী। ব্লেড দিয়ে হাত কেটে সেই রক্ত দিয়ে ‘নো এনআরসি’ লিখে এক আবেগঘন প্রতিবাদে শামিল হলেন চাকদার ছেলে-বুড়ো সকলে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। প্রতিবাদ ও প্রশাসনের প্রতিরোধের মুখে রক্তে ভিজেছে দেশের মাটি। আর ঠিক এই সময়েই অন্যরকমভাবে ‘রক্ত দিয়ে’ই এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন নদিয়ার চাকদার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের এখানে একজন ব্যাঁকা ও ন্যাকা লোক আছে!’ কাকে বললেন মমতা?
রক্ত দিয়ে ‘নো এনআরসি’ লিখে প্রতিবাদ জানালেন নদিয়ার চাকদার বাসিন্দারা। #NRC_CAA_Protest #WestBengal pic.twitter.com/b0nD3HMPvI
— IE Bangla (@ieBangla) December 24, 2019
https://platform.twitter.com/widgets.js
ভিডিও: পলাশ মণ্ডল।
‘আমরা কারা, ভারতীয়’, এই স্লোগান তুলেই কোনও রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ না করে এনআরসি ও সিএএ-র প্রতিবাদে এদিনে মিছিলে অংশ নিলেন চাকদার আট থেকে আশি, সকলেই। এখানকার কেবিএম শহিদ বেদি মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে মিছিল চলে রথতলা পর্যন্ত। তবে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের পরিচয় প্রকাশ না পেলেও এনআরসি বিরোধিতায় ‘গো ব্যাক মোদী-শাহ’ স্লোগান শোনা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘দেশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। ভারতবর্ষের মানুষকে লাঞ্ছনা করা হচ্ছে। নিজেদের হাত কেটে রক্ত দিয়েছি তাই। কেউ কেউ মোমবাতি হাতে নিয়েও এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন’’।
আরও পড়ুন: ‘মুসলমানরা নেই কেন?’, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতা-নেতাজির পৌত্র
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি-র প্রতিবাদে উত্তাল গোটা দেশ। বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যভাবে গর্জে উঠেছে বাংলাও। সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় কলকাতার রাজপথে একের পর এক মিছিল নৈমিত্তকতায় পরিণত হয়েছে। সিএএ বিরোধিতায় কলকাতায় মিছিলে হেঁটেছেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। আবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এনআরসি-সিএএ-র সমর্থনে ‘অভিনন্দন যাত্রা’ও করেছে গেরুয়া শিবির। এমতাবস্থায় চাকদার এদিনের প্রতিবাদ নিঃসন্দেহে ভিন্নধারার।