আশ্বাস ছিল, ২০১৮ সালের পুজোয় জ্বলে উঠবে এলাকার সব স্ট্রিট লাইট। কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়নি লাইট পোস্টগুলিতে, এমনই অভিযোগ কাঁকসার গ্রামবাসীদের। অগত্যা উন্নয়নের 'আলো' না পেয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই রাতের অন্ধকারে যাতায়াত করছেন গ্রামবাসীরা। আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদ (এডিডিএ)-এর উদ্যোগে স্ট্রিট লাইট পোস্ট বসানো হলেও এখনও পর্যন্ত সেই পরিষেবা কোনও সুবিধাই ভোগ করতে পারেনি দুর্গাপুরের এই গ্রামের বাসিন্দারা।
দুর্গাপুর, কাঁকসা ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার প্রধান সড়কে পুজোর আগেই বসেছিল স্ট্রিট লাইট। দুর্গাপুজোর আগে স্ট্রিট লাইটগুলির পরিষেবা মিললে গ্রামবাসীরা উপকৃত হবেন, এমন দাবি করে এডিডিএ কাজ শুরু করলেও শেষ অবধি বিদ্যুৎ পৌঁছল না খুঁটিগুলিতে। আসানসোল- দুর্গাপুর উন্নয়ন পরিষদের অবশ্য বক্তব্য, পঞ্চায়েতের সাথে এডিডিএ-এর উন্নয়ন প্রকল্পের পদ্ধতিগত কিছু জটিলতা থাকার কারণেই পরিষেবা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি এডিডিএ-এর পক্ষ থেকে।
ঠিক কী অভিযোগ ?
গতবছর দুর্গাপূজোর আগে কাঁকসা, আমলাজোড়া ও গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রধান রাস্তার ওপর স্ট্রিট লাইট বসানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কাঁকসার থানা রোড এলাকায় এবং গোপালপুরের বাঁদরা মোড় থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের রাজবাঁধ এলাকা পর্যন্ত এবং আমলাজোড়ার মানিকআড়া গ্রাম থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের রাজবাঁধ পর্যন্ত স্ট্রিট লাইট বসানো হয়। তবে এলাকাবাসীদের অভিযোগ, প্রায় এক বছর কেটে গেলেও স্ট্রিট লাইটগুলিতে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারেনি প্রশাসন। ব্যস্ত জীবনে গ্রামবাসীদের দিন কাটছে সেই আঁধারেই।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুরে পুলিশের হাতে রাখি বাঁধলেন যৌনকর্মীরা
বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও লাইট না জ্বলায় হতাশ হয় গ্রামবাসীরা। এমনকী অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা নিজের বাড়ির বিদ্যুৎ খরচ করেই স্ট্রিট লাইটে আলো জ্বালেন। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, "২ নম্বর জাতীয় সড়কের রাজবাঁধ মোড় থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দু'পাশে ফাঁকা মাঠ এবং রাস্তা বেহাল। গ্রামের মানুষ এবং পড়ুয়ারা বিভিন্ন জায়গা থেকে কাজ শেষ করে, স্কুল-কলেজ সেরে রাতে বাড়ি ফেরে ওই রাস্তা ধরেই। ফলে তাঁদের বিপদের আশঙ্কা থাকেই যায়। রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি বসায় গ্রামের বাসিন্দারা খুশি হয়েছিল। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ না হওয়ায় চরম নাকাল হচ্ছেন তাঁরা। আমি সাধারণ মানুষের কথা ভেবে দু'টি স্ট্রিট লাইটে আমার ব্যক্তিগত খরচে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছি। এতে পথচারীদের অনেক উপকার হয়েছে। তবে প্রশাসন পুজোর আগে প্রতিটি স্ট্রিট লাইটে বিদ্যুৎ সংযোগ করে দিলে আমরা সবাই উপকৃত হব"।
আরও পড়ুন- জলসংকট, বিষাক্ত জল, সাপের আতঙ্ক দুর্গাপুরের একশো পরিবারের জীবনসঙ্গী
অন্যদিকে, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, "পঞ্চায়েতে এডিডিএ প্রকল্পের জন্য পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। সেটা এখনও সমাধান হয়নি। এই জটিলতার কারণে লাইটপোস্টগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া যে বেসরকারি সংস্থা স্ট্রিট লাইটের কাজ করছিল তাদের একটি মোটা অঙ্কের টাকা বাকি ছিল। সেই টাকা আমরা ধীরে ধীরে মেটাচ্ছি। তবে এবার দুর্গাপুজোর আগে প্রতিটি স্ট্রিট লাইটে আলো জ্বলে উঠবে"। পুজোর আগে এবার তাই আলোর আশায় দিন গুনছেন কাঁকসাবাসীরা।
দুর্গাপুরের সব খবর পড়ুন এখানে