শহিদ দিবসে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেও বিরোধী ঐক্যের কথা শোনা গেল না তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে। সিপিএমের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ নিয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুললেও মুখেই আনলেন না কংগ্রেসের নাম। সমালোচনাও করেননি তবে সঙ্গে থাকার বার্তাও দেননি মমতা। এদিকে এদিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট জিজ্ঞাসাবাদ করছে কংগ্রেসনেত্রী সনিয়া গান্ধিকে। এবারের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দলবদলও ঘটেনি। টানা তিনবছর বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর এই শহিদ দিবসে তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্যে তেমন ঝাঁঝ খুঁজে পায়নি রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন- ‘সিপিএম আমলে লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি’, নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে বামেদের পাল্টা নিশানা মমতার
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পথে। এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর জয় নিশ্চিত। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগ নিয়ে দিল্লিতে বিরোধীদের এক টেবিলে বসিয়েছিলেন। তাঁর ডাকা বৈঠকে কংগ্রেসের প্রতিনিধিও হাজির ছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিজেপি তথা এনডিএ আদিবাসী প্রার্থী দেওয়ায় ঢোক গিলেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন রাষ্ট্রপতি ভোটের গণনা চললেও একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি মমতা। বিরোধীদের উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর বৈঠকে তৃণমূল থাকেনি তার কোনও প্রতিক্রিয়া ঘাসফুল শিবির এখনও দেয়নি। এ বিষয়ে ২১-র সভা থেকেও কোনও মন্তব্য করেননি মমতা।
আরও পড়ুন- ‘আমরা চাই চাকরি হোক, বিজেপি চায় চাকরি যাক’, গেরুয়াকে নিশানা মমতার
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে একুশের মঞ্চ থেকে দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তবে কীভাবে বিরোধীরা জোটবদ্ধ হবে তার কোনও ঘোষণা করেননি মমতা। ২০১৮ লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে অবিজেপি দলগুলো একমঞ্চে সভা করেছিল। সেই সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন মমতা। এদিনের সভায় সামগ্রিক ভাবে বিজেপি বিরোধী জোটের জন্য এক টুকরো শব্দও বরাদ্দ করেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একবারের জন্যও মুখে আনেননি কংগ্রেসের নামও। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া-রাহুলকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট লাগাতার তলব করছে। ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও এই বিষয়ে কোনও কথা বলেননি তৃণমূলনেত্রী। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলকে শুদ্ধিকরণ করতে তোলাবাজি করলে পুলিশর দ্বারস্থ হতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন- মমতার কড়া হুঁশিয়ারি, ‘বকেয়া না পেলেই এবার দিল্লি ঘেরাও’
এবারে ২১ জুলাইয়ে দলবদলের বিতর্কে হাটেনি তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বলেছেন লকগেট খুলে দিলে হুহু করে বিজেপি থেকে তৃণমূলে ঢুকবে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর ৭-৮জন বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি। তবে এদিন শুধু বিজেপি নয়, কোনও দল বা কোনও ক্ষেত্র থেকেই ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেয়নি। এটাও একটা ব্যতিক্রম ঘটনা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।