apple farming:উত্তরবঙ্গেই মিলবে কাশ্মীরি স্বাদের আপেল। বাক্যটি পড়ে অনেকে হয়তো অবাক হয়ে বলবেন, ধুর...তা আবার হয় নাকি! কিন্তু এটাই সত্যি হতে চলেছে। উত্তরবঙ্গবাসীকে আর কাশ্মীরের আপেলের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হবে না। মংপুর আপেলেই মিলবে কাশ্মীরি আপেলের স্বাদ।
কীভাবে? মংপুতে পরীক্ষামূলক আপেল চাষ সফল হয়েছে, এমনটাই দাবি করেছেন সিঙ্কোনা প্রকল্পের অধিকর্তা ডঃ স্যামুয়েল রাই। তিনি বলেছেন, ‘কাশ্মীর এবং দার্জিলিং পাহাড়ের আপেলের স্বাদে কেউ তফাত বুঝতে পারবেন না।’ তিনি জানান, পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্যের পর এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। হয়তো এমন একটা সময় আসবে, যখন আর বাইরের আপেলের ওপর নির্ভর করে থাকতে হবে না।
মংপুতে পরীক্ষামূলকভাবে দুই কাঠা জমিতে কাশ্মীর ভ্যারাইটির আপেল চাষ করেছিল সিঙ্কোনা অ্যান্ড আদার মেডিসিনাল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ। কিছু ক্ষেত্রে রোগপোকার আক্রমণ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আকার, রং এবং স্বাদে অতুলনীয় বলে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates: চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা এবার দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে? আন্দোলনের ভোল বদলাতে মেগা প্ল্যান
কয়েক বছর আগেই মংপুতে কফি চাষ করে সাফল্য এসেছে। এখানকার কফি এখন কেরল, কর্ণাটকের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেছে। ইতিমধ্যে মংপুতে সিঙ্কোনা প্রকল্পে অনেকটা জায়গাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ হচ্ছে। মংপুর সিঙ্কোনা প্রকল্পের আউটলেট থেকে বিক্রি হচ্ছে কফি। এবার আপেল চাষেও বড়সড়ো সাফল্যের মুখ দেখতে চলেছে পাহাড়।
স্যামুয়েলের কথায়, ‘কাশ্মীরে যে এলাকাগুলিতে আপেল চাষ ভালো হয়, সেখানে প্রায় সারাবছর ভীষণ ঠান্ডা থাকে। তুলনায় মংপুর আবহাওয়া উষ্ণ। তবুও এখানে আপেলের ফলন খুব ভালো হয়েছে। পাশাপাশি এখানকার আপেল ভীষণ মিষ্টি এবং রসালো।’ কিন্তু রোগপোকার আক্রমণ থেকে আপেল বাঁচানোর উপায় কী? স্যামুয়েল জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন- Bengal Corona: করোনার কড়াল থাবা! ৯ মাসের শিশুর দেহে মিলল কোভিড ভাইরাস,চূড়ান্ত আতঙ্ক খাস কলকাতায়
গত শনিবার সিঙ্কোনা প্রকল্পের কর্মী, চাষি এবং গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) কর্তাদের উপস্থিতিতে গাছ থেকে আপেল পেড়ে খাওয়া হয়েছে। সেদিনই নতুন করে রংলি রংলিয়ট ব্লকের ৫০ জন চাষিকে দেওয়া হয়েছে আপেলের চারা। ধাপে ধাপে চাষের এলাকা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন স্যামুয়েল।
জিটিএ’র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মার বক্তব্য, ‘আমি শনিবার মংপুতে ছিলাম। সেখানকার আপেল খেয়ে কাশ্মীরের স্বাদ পেয়েছি। আমরা চাই পাহাড়ে আপেলের চাষ বাড়ুক।’ তাঁর সংযোজন, ‘আপেল চাষের জন্য পাহাড়ে কৃষকদের নিয়ে সমবায় তৈরি করে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।’
এমনিতে দার্জিলিংয়ের কমলালেবু এবং চায়ের বিশ্বজোড়া খ্যাতি। তবে সরকারি সহযোগিতা এবং সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে বর্তমানে পাহাড়ের কমলালেবুর চাহিদা পড়তির দিকে। অন্যদিকে, নেপালের ‘খারাপ মানের’ চা এপারে এসে ‘দার্জিলিং চা’ নামে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় মার খাচ্ছে এখানকার দুটি পাতা একটি কুঁড়ির শিল্প। অথচ এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে কফি এবং আপেল।