মঙ্গলবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাসভবনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বৈঠকে বসেছিলেন জেলা সভাপতি ও নির্বাচনী স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা। বৈঠক শেষ হওয়ার পরই ঘোষণা করা হল প্রার্থী তালিকা।
প্রত্যেক নির্বাচনেই নতুন মুখ কারা থাকছেন, তা নিয়ে চলে জল্পনা। গতকাল চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা হতেই দেখা গেল বড় চমক রয়েছে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেই। যাদবপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন মিমি চক্রবর্তী। অন্যদিকে, বসিরহাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে নুসরত জাহানকে। প্রার্থী ঘোষণার পর কেটে গেছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। এই সময়ের মধ্যে নেট দুনিয়া রীতিমত সরগরম হয়ে উঠেছে এই দুই টলিউডি গ্ল্যামার কন্যাকে নিয়ে। শুরু হয়ে গেছে ট্রোল-মিমের ঝড়।
আরও পড়ুন: মিমি-নুসরত এবং ট্রোলের অন্ধকার জগৎ
এদিকে এদেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক ভোট যুদ্ধের মরশুমে প্রাথমিকভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। রাখা হয়েছে 'গ্রিভান্স অফিসার'। কোনওভাবেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বেফাঁস কিছু প্রকাশ করলেই 'গ্রিভান্স অফিসার'-এর নজরে পড়বেন। পোস্টের বিষয় যদি বিতর্কিত হয়, সোশ্যাল মিডিয়ার তরফে সেই মেসেজ ডিলিট করা হবে। তবে এতেই শেষ নয়, তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী আইনভঙ্গের দায়েও পড়তে পারেন পোস্টদাতা।
আরও পড়ুন: ‘বিবাহ অভিযান’ থেকে সরে ভোট অভিযানে মিমি
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন গ্রিভান্স অফিসার। বিতর্কিত টুইট, ফেসবুক পোস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের জন্য যাতে কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক ভোটের পরিস্থিতি নষ্ট না হয়, সেদিকে কড়া নজর রেখেছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, এ বিষয়ে সহায়তা করবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেগুলিও।
আরও পড়ুন: লড়াইয়ের জন্য আমি তৈরি: নুসরত জাহান
এখন প্রশ্ন, এই ধরণের ট্রোল অনৈতিক বা অশোভন বলা যায় কি? ট্রোল করাই হয় বিনোদনের জন্য, কিন্তু ঠাট্টার মোড়কে এই 'মিম সমুদায়' নেতিবাচক ভাবধারার প্রকাশ বলে মনে করছেন নেট পাড়ার একাংশ। একইসঙ্গে, তামাম ট্রোলের কড়া নিন্দা করেছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা। অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ ফেসবুকে লিখেছেন, "খুব হাসি পাচ্ছে। বিদেশ বাদ দিলেও এদেশে ফিল্ম জীবিকার লোকজনের ভোটে দাঁড়ানো বা ভোটে জিতে দেশ বা রাজ্যের মন্ত্রীত্ব সামলানো নতুন নয়!! তার পরেও মিমি আর নুসরত ভোটে দাঁড়াবার পর কিছু লোকজনের হাসাহাসি দেখে খুব হাসি পাচ্ছে!!" অন্যদিকে একাংশ সমর্থন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে।
দুই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বহুসংখ্যক সাধারণ মানুষও। অনেকেই মিমি-নুসরত নিয়ে 'মিম'-কে নারী বিরোধী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ঘটা করে নারী দিবস উদযাপন করলেই মহিলাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় না। আরও অনেকে এই ধরনের "ব্যক্তিগত আক্রমণের" সমালোচনা করেছেন। জীবনের নানা ক্ষেত্র থেকে আসা মানুষ যদি ভোটে দাঁড়াতে পারেন, তবে মিমি-নুসরত নন কেন, এই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা নুসরতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, "বিভিন্ন জায়গায় বহুবিধ ক্ষেত্রে আমরা দায়িত্ব পালন করি, এটা একটা বড় দায়িত্ব বটেই। তবে আমি পার্টির প্রতি, মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমার উপর বিশ্বাসটা রেখেছেন। আমি নার্ভাস, কিন্তু সেই সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।"