RG Kar case: কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর এক বছর পার হতে চলল। এই সময়টায় গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তবে নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, তাঁরা এখনও ন্যায় বিচার পাননি। আগামী ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের এক বছর পূর্তি। ওই দিন আবারও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক শহর থেকে জেলায়। ঠিক এই আবহে ফিরে দেখা আরজি করের সেই নারকীয় ঘটনা ও তারপর থেকে পরপর কিছু ঘটনাক্রম।
৯ আগস্ট, ২০২৪ :
কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার হলে অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ। কলকাতার খ্যাতনামা ওই সরকারি হাসপাতালের পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসক-ছাত্রী ছিলেন ওই তরুণী।
ওই দিন ভোর সাড়ে চারটের সময় হাসপাতালের CCTV ফুটেজে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে সেমিনার রুমের কাছে দেখা যায়। তরুণী চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মেলে। মুখ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
১০ আগস্ট ২০১৪ :
ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় কলকাতা পুলিশ। গ্রেপ্তার হয় ধর্ষণ-খুনে প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় নামে তৎকালীন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার।
আরও পড়ুন- West Bengal news Live Updates: অশ্লীল ভিডিও ইস্যুতে এবার লালবাজারে অভিযোগ দিলীপ ঘোষের, তদন্তে সাইবার বিশেষজ্ঞরা
১২ আগস্ট ২০২৪ :
ততদিনে কলকাতার খ্যাতনামা সরকারি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস পরিণতি নিয়ে সমালোচনার সুনামি বয়ে গিয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের আগুন। এদিন চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে নিয়ে CBI-কে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ :
আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সিবিআই গ্রেপ্তার করে সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে। সন্দীপ ঘোষ আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ ছিলেন। অভিজিৎ ঘোষ সেই সময় টালা থানার ওসি পদে চাকরি করতেন।
আরও পড়ুন-Malda News:অষ্টমঙ্গলায় স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন জামাই, এখবর রটতেই ছিঃ ছিঃ করছে গোটা পাড়া!
১১ নভেম্বর ২০২৪ :
শিয়ালদহ আদালতে মামলার চার্জ গঠন করা হয়।
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ :
গ্রেপ্তারির পর ৯০ দিনের মাথাতেও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা চার্জশিট জমা দিতে না পারায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে জামিন দেয় আদালত। শিয়ালদহ আদালতে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের মামলা ছিল তাদের বিরুদ্ধে। সেখানেই জামিন পান তারা।
আরও পড়ুন-Vice President Election: কে হচ্ছেন ধনখড়ের উত্তরসূরী? শুরু প্রস্তুতি, দেশ জুড়ে তুঙ্গে জল্পনা
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ :
বেশ কিছুদিন ধরেই শিয়ালদহ আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলার পর এদিন সঞ্জয় রায়কে আরজি করে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয়কে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেন।
২০ জানুয়ারি ২০২৫ :
শিয়ালদহ আদালত আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন, সেই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তবে আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা তরুণীর পরিবার ন্যায় বিচার এখনও পাননি বলেই তাঁদের দাবি। আরজি করের নারকীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া চিকিৎসক এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সংগঠন 'অভয়া মঞ্চ'-এরও সেই একই দাবি। ন্যায্য বিচারের দাবিতে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে 'অভয়া মঞ্চ'।
আরও পড়ুন- Mohammad Yunus interim govt: ইউনূসকে 'আগুনে আক্রমণ'! 'গণতন্ত্রের কবরস্থানে'পরিণত বাংলাদেশ?
রাজনৈতিক দলগুলিও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। আরজি করের ঘটনায় CBI তদন্তে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় নির্যাতিতার পরিবার। তাঁর বাবা-মা এখনও মনে করেন শুধুমাত্র সঞ্জয় নয়, তাঁদের মেয়ের এই চরম পরিণতির নেপথ্যে আরও বেশ কয়েকজনের ভূমিকা রয়েছে।