/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/13/IFHPJOQe9byurq68kz0J.jpg)
Mid Day Meal: মিড ডে মিলে খুদে পড়ুয়াদের পিঠে-পুলি, পায়েস খাওয়ানো চলছে।
Nabanna: মিড-ডে মিলে (Mid Day Meal) পিঠে-পুলি-পায়েস। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের জয়রামপুর ত্রিপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা জমিয়ে খেল নলেন গুড় ও সুগন্ধী চাল দিয়ে তৈরি পায়েস ও পিঠে-পুলি। এছাড়াও মেনুতে ছিল জিভে জল আনা কমপক্ষে ১৫ ধরনের খাবার। যা খেয়ে বেজায় আনন্দে কচিকাচার দল। খাবার ফাঁকেই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে বাংলার 'নবান্ন পার্বণ'-এর তাৎপর্যের কথাও শুনল পড়ুয়ারা।
রাজ্যের শস্যগোলা হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। কৃষি নির্ভর এই জেলার অন্যতম পার্বণ নবান্ন। আমন ধান জমি থেকে ঘরে তোলার পর সেই ধান থেকে তৈরি চাল দিয়ে তৈরি অন্ন দেবতাকে প্রথম নিবেদন করেন এই জেলার প্রতিটি কৃষিজীবী পরিবার। এই রীতিকে আঁকড়েই এরপর শুরু হয়ে যায় 'নবান্ন পার্বণ'। নবান্ন পার্বণের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে স্কুলের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের বোঝাতে অভিনব একটি সিদ্ধান্ত নেন মন্তেশ্বরের জয়রামপুর ত্রিপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সেই মতো ঠিক হয় বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের খাবারেই থাকবে নবান্নের মেনু। সেই মেনু অনুযায়ী বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের রান্না ঘরে হরেক রকম ফল সহযোগে বানিয়ে ফেলা হয় নতুন সুস্বাদু চাল মাখা। এছাড়াও বানানো হয় নলেন গুড়ের পায়েস, গুড় পিঠে, কলাই ডালের বড়া, ভাত,পনির, ফুলকপির তরকারি ও নানা রকমের ভাজাভুজি। শেষ পাতে পড়ুয়াদের দেওয়া হয় রসগোল্লা ও চাটনি। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রীপর্ণা চট্টোপাধ্যায় এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় সহ অন্য শিক্ষকরা নিজের হাতে পড়ুয়াদের সেই খাবার পরিবেশন করেন। মহানন্দে চেটে-পুটে এত রকম খাবার খেয়ে খুদে পড়ুয়ারা বেজায় তৃপ্ত।
প্রধান শিক্ষক মধূসূদন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের স্কুলে গরিব, দিনমজুর পরিবারের ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা করে। অভাব-অনটনের কারণে পড়ুয়াদের পরিবার বাড়িতে নবান্ন অনুষ্ঠান করতে সামর্থ হন না। তাই ওই পড়ুয়াদের কাছে তাৎপর্য হারাচ্ছিল নবান্ন পার্বণ। সেকথা মাথায় রেখে স্কুলেই পড়ুয়াদের বাংলার নাবান্ন পার্বণের সঙ্গে পরিচয় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিড -ডে মিলকেই বেছে নেওয়া হয়।"
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রীপর্ণা চট্টোপাধ্যায় বলেন, "পড়ুয়াদের বাংলার নবান্ন পার্বণের তাৎপর্য বোঝাতে জয়রামপুর ত্রিপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগ সত্যিই অভিনব। খুবই শিক্ষণীয় একটি বিষয়। পড়ুয়াদের আনন্দ দেওয়ার মধ্য দিয়ে শিক্ষকরা যেভাবে নবান্ন পার্বণকে তুলে ধরেন, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।”