২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। এ রাজ্যে প্রায় ২২টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে রাজ্যে প্রচারে নামছে তিনটি রথ। তারও প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু বিজেপি রাজ্য নেতাদের অভিযোগ, রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের সভা, সমাবেশ, ধর্ণা করতে অনুমতি দিচ্ছে না। তাঁদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তা সত্ত্বেও অবশ্য ঘোষিত কর্মসূচি থেকে পিছোচ্ছে না গেরুয়া বাহিনী। নদিয়ার মাজদিয়া, হুগলির গুরাপ, সোমবার বোলপুরে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই একের পর এক কর্মসূচি করছে তারা। এইসব সভার নেতৃত্বে ছিলেন কখনও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কখনও বা সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।
আরও পড়ুন: মোদী যেন শিবলিঙ্গের মাথায় বসা কাঁকড়াবিছে, আরএসএস সূত্র উদ্ধৃত করে বললেন শশী থারুর
রবিবার গুরাপে বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তারপর বিজেপির রাজ্য সভাপতি কামারকুন্ডুতে পুলিশ অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। এর আগে মাজদিয়াতেও দিলীপ ঘোষের সভার অনুমতি মেলেনি। তবু সভা করেছেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমরা তো ধরেই নিয়েছি আমাদের সভা-সমাবেশ করতে দেবে না। গতকাল গুরাপে কর্মসূচি করতে দেয়নি। আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে, শক্তি প্রদর্শন করতে দেবে না। কাল আমরা যে কার্যক্রম করলাম তাতে আমরা মাইলেজ কম পেয়েছি কি? কাল সারাদিন মিডিয়াতে চলেছে। আমরা রাস্তায় থাকব। গনতন্ত্রে কেউ রাস্তা বন্ধ করতে পারবে না।"
রাজ্য সভাপতির হুমকি, "বিজেপিকে তৃণমূল আটকে দেবে, সেই দম তৃণমূলের নেই। রাস্তা বের করব, মাইলেজ নিয়ে নেব। ঠিক দেখিয়ে দেব আমরা পারি। ওরা ডিফেন্সিভ, আমরা অফেন্সিভ হয়ে গিয়েছি। আমরা অ্যাটাক করছি, ওরা বাঁচার চেষ্টা করছে।"
আরও পড়ুন: ছোট দলগুলো একজোট না হলে, উনিশের পর কোনও ভোট হবে না: হার্দিক
বীরভূমে লাভপুরে দলের এক কর্মীকে খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বোলপুরে ধর্ণার ডাক দেয় বিজেপি। পুলিশ ওই ধর্ণার কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ করেন সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, "আমাদের সভার অনুমতি দিচ্ছে না প্রশাসন। বোলপুরে সোমবারের সভায়ও পুলিশ অনুমতি দেয়নি। বোলপুরে এসডিও অফিসের সামনে ধর্ণায় আমিও অংশ নিয়েছি। এবার লকেট চট্টোপাধ্যায় যাচ্ছেন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও বহুবার সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিজেপি মানুষের কাছে যাবে।"
বিজেপি রথযাত্রা কর্মসূচিকে সফল করতে নানা ধরনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। রথের যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় সভার অনুমতি মিলবে কী না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে গেরুয়া বাহিনীর। তবে রথযাত্রার ওপর আক্রমন হলে কী করা হবে, তা নিয়ে প্রাক্তন আইপিএস অফিসারদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছে দল। জানা গিয়েছে, শুধু তাই নয়, রথের দায়িত্বও বর্তাচ্ছে তাদের ওপর। এমনকী রাজ্য বিজেপি দপ্তরে রথের জন্য একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হবে। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "তৃণমূল আমাদের মারবে কী, নিজেদের ঘর সামলাক। প্রায়ই জেলায় আমাকে সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তখন আমরা পিছিয়ে ছিলাম, মারপিট-গন্ডগোল হলে আমাদের ক্ষতি হবে বলে। এখন উল্টো হচ্ছে। মানুষ দেখছেন, তৃণমূলকে আমরাই সামলাতে পারব।"