পশ্চিমবঙ্গে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির কিছু সংখ্যক শিক্ষক বেতনবৃদ্ধির দাবিতে আগামী ১৫ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসছেন। তাঁদের অভিযোগ, বারংবার বেতনবৃদ্ধির দাবি জানালেও তৃণমূল সরকার সেই দাবি পূরণ করতে অক্ষম হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক প্রশিক্ষিত শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পিন্টু পাড়ুই বলেন, "রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফেব্রুয়ারি মাসে এই বিষয়ে নজর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি নিয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।"
আরও পড়ুন, ‘পিছন থেকে ছুরি মারি না’, মুকুলের সঙ্গে পরোটা-ফিশ কাটলেট খেয়ে দাবি সব্যসাচীর
তবে প্রাথমিক প্রশিক্ষিত শিক্ষক সংগঠনদের তরফে পিন্টু পাড়ুই বলেন, "আমরা ১০ এপ্রিল সংগঠনের তরফে বিকাশ ভবনে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার আর্জি জানাই।" তাঁর আরও বক্তব্য, "শিক্ষকদের যোগ্যতার কথা মাথায় রেখে তাঁদের সমতুল্য মানে বেতন বৃদ্ধি করা উচিত। কারণ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে চাকুরিরত প্রাথমিক শিক্ষকেরা অনেক কম বেতন পান। যা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।"
এমনকি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয় যাতে ২০০৫-০৬ সালে যে সব প্রার্থীরা যোগ্যতা অর্জনের পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন তাঁদের যেন অবিলম্বে নিয়োগ করার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক বলেন, "১৩ বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বাম সরকার। ২০০৫-০৬ সালে যাঁরা পাশ করেছিলেন তাঁদের এখনও নিয়োগ করা হয়নি। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার এসে আমাদের এই প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগের বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি।"
আরও পড়ুন, সিবিআইয়ের নজরে ফের শুভাপ্রসন্ন, বুধবার হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ
প্রসঙ্গত, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নূন্যতম যোগ্যতামান অনুযায়ী ন্যায্য বেতনের দাবিতে ও বেআইনিভাবে বদলির প্রতিবাদে কলকাতায় মিছিল করে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। সেই সময় আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষিকা পৃথা বিশ্বাস বলেন, "এনসিটিই মেনে আমরা আমাদের যোগ্যতা বাড়িয়েছি। কিন্তু সেই অনুযায়ী আমাদের বেতন দেওয়া হয় না। আমরা পশ্চিমবঙ্গের বেতন কাঠামোয় পিবি টু, অথচ আমাদের যোগ্যতা পিবি ফোর কাঠামোয় বেতন পাওয়ার উপযুক্ত। আমরা এই বৈষম্য দূর করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে মিছিল করছি।" উল্লেখ্য, মিছিলকারী শিক্ষকদের ফেরাতে কলকাতা পুলিশের জলকামান ব্যবহার করা হয়, আটক হন কিছু শিক্ষক।