Advertisment

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, মালদা, নদীয়ায় অবরোধ-বিক্ষোভ

রেল অবরোধের পর একাধিক স্টেশনে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যাহত যান চলাচল। ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজটের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ। ছবি: উৎসব মণ্ডল

শুক্রবারের পর শনিবার। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সকাল থেকেই ট্রেন আটকে ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। নাকাল সাধারণ মানুষ। রেল অবরোধের পর একাধিক স্টেশনে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যাহত যান চলাচল। ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজটের।

Advertisment

শনিবার সকালে শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার হাড়োয়া স্টেশনে রেল লাইনে অবরোধ করেন স্থানীয়রা। বিক্ষোভ দেখানো হয় হাসনাবাদ শাখারও আরও বেশ কয়েকটি স্টেশনে। অবরোধের জেরে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত ট্রেন চলাচল। বাতিল করতে হয় সকালের দিকে লোকাল ট্রেন। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ বিক্ষোভ চলে। যার জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। আমডাঙার রোফিপুর, বিডিও অফিস মোড়, রায়পুর, আওয়ালসিদ্ধি, রংমহল ও কাচারি প্রভৃতি জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভও দেখায় অবরোধকারীরা। নদীয়ার নাকাশিপাড়া থানার বড়গাছী গ্রামে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতীকী এনআরসি বিল পুড়িয়ে প্রতিবাদ করে বিক্ষোভকারীরা। এরপরই মিছিল করে গ্রাম প্রদক্ষিণও করেন তাঁরা।

সাঁকরাইল স্টেশনের কেবিনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হয় রেলের গেট। ভেঙে দেওয়া হয় সাঁকরাইল স্টেশনের রূট রীলে ইন্টারলকিং প্যানেল বোর্ড। চেঙ্গাইল স্টেশনেও একইভাবে ভাংচুর চালান হয়।

অন্যদিকে, সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্তেও চলছে অবরোধ। জঙ্গিপুর স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রেন। ট্রেন দাঁড়িয়ে মহিপাল স্টেশনেও। বিভিন্ন প্রান্তে বিপর্যস্ত ট্রেন চলাচল। বিক্ষোভের জেরে লালগোলা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ডোমকলের সলপমোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সুতি থানায় এলাকায় বাসে ভাঙচুর চালানো হয়।

আরও পড়ুন: ক্যাব-এনআরসি নিয়ে গণ আন্দোলনের ডাক মমতার, রবিবার থেকে রাজ্যজুড়ে পথে তৃণমূল

উত্তপ্ত হাওড়ার সাঁতরাগাছি। ৬টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। দমকল আগুন নেভাতে গেলে ঢিল ছোড়া হয় বলে আভিযোগ। রেলসুত্রে জানা যায়, আন্দুল, সাঁকরাইল, নলপুর, বাউরিয়া স্টেশনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রেল অবরোধ চলছে। সাঁতরাগাছিগামী রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সকাল ১১টা থেকে বীরভূমের রামপুরহাট-পাকুড় স্টেশনের মাঝে অবরোধের জেরে আটকে রয়েছে ট্রেন। মালদার ধুলিয়ান গঙ্গা ও বল্লালপুর স্টেশনের মাঝেও বিক্ষোভ চলছে।

রেল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিক্ষোভের জেরে বাতিল করা হয়েছে আপ ও ডাউন কামরূপ এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রেন বাতিল হয়েছে। আজ বাতিল বলে ঘোষণা করা হয় শিয়ালদহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রবিবারের আগরতলা-শিয়ালদহ কাঞ্জনজঙ্গা এক্সপ্রেস বাতিল হয়েছে। ওই দিনের ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসও বাতিল করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:  নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর বাংলায় বিশেষ পদক্ষেপ বিজেপির

নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ ঘিরে শুক্রবার অগ্নিগর্ভ উলুবেড়িয়া স্টেশন চত্বর। দুপুর থেকে উলুবেড়িয়া স্টেশনে আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন অবরোধে শামিল হন বিক্ষোভকারীরা। ট্রেন লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, উলুবেড়িয়া স্টেশনে এদিন ভাঙচুরও চালান বিক্ষোভকারীরা। এর জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস ফেরত যাত্রীরা। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশনেও। রেল অবরোধে বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় আরপিএফ কর্মীদের। তাতে গুরুতর জখম হন একজন। উলুবেড়িয়ার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশনেও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানেও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান বহু মানুষ। বেলডাঙা স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন সসকাল থেকেই থমথমে রয়েছে বেলডাঙা।

নিজেদের হাতে আইন তুলে না নেওয়ার জন্য বিক্ষোভকারীদের পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্য সরকার বাংলায় এনআরসি লাগু হবে না বলেই শুক্রবারই ফের স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র প্রতিবাদে রবিবার থেকে বুধবার লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।

West Bengal
Advertisment