/indian-express-bangla/media/media_files/2025/04/12/zasrIwpeNyUxp0b3eMz2.jpg)
ওয়াকফ-প্রত্যাহারে অশান্তির স্রোত, 'হিংসার বলি ২', দাবি বিজেপির, মমতার পদত্যাগের দাবিতে হুঙ্কার শুভেন্দুর
Protest Aganist Waqf (Amendment) Act: ওয়াকফ সংশোধনী আইন (Waqf Amendment Act) প্রত্যাহারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের জেলায়-জেলায় প্রবল প্রতিবাদর স্রোত আছড়ে পড়েছে। শহর কলকাতাতেও বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে। তবে গোটা রাজ্যের মধ্যে ওয়াকফ আইন নিয়ে সবচেয়ে বেশি অশান্তি ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদে। জেলার জঙ্গিপুর দিয়ে শুরু হওয়া হিংসা, ক্রমেই ছড়িয়েছে সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে। বেপরোয়াভাবে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের অশান্তি বিধ্বস্ত জায়গাগুলিতে টহল দিচ্ছে BSF। শনিবারই গুজবে কান না দিয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। একই বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
'গুণ্ডামি রুখতে অত্যন্ত কড়া হবে পুলিশ', মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ-অশান্তিতে কঠিন বার্তা DG-র
এক্স হ্যান্ডলে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনো অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না। দাঙ্গা যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন। মনে রাখবেন, যে আইনের বিরুদ্ধে অনেকে উত্তেজিত, সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে বলেছি - আমরা এই আইনকে সমর্থন করিনা।"
এরই পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এদিন আরও লিখেছেন, "এই আইন আমাদের রাজ্যে লাগুও হবে না। তাহলে দাঙ্গা কিসের? আরো মনে রাখবেন, দাঙ্গায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা নেবো। কোনো হিংসাত্মক কার্যকলাপকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছেন। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন - এই আমার আবেদন।"
ওয়াকফ বিক্ষোভে অশান্ত মুর্শিদাবাদ। ধুলিয়ান, সুতি, সামশেরগঞ্জে গতকালের পর আরও ৫ কোম্পানি বিএসএফ মোতায়েন করা হয়েছে। অশান্তি বরদাস্ত নয় কড়া বার্তা রাজ্যের ডিজিপির। এদিকে গতকালের মর্শিদাবাদের অশান্তি ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেনা নামানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, "নূন্যতম লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন। রাজ্যে অরাজকতার আগুন জ্বেলে দিয়ে রাজনীতির রুটি সেঁকছেন আপনি। উসকানি আপনি দিয়েছেন তাই দায় আপনার, এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে বিপাকে পড়ে আবেদন জানাচ্ছেন। তবে শুনে রাখুন, আপনার সৃষ্টি করা এই ধ্বংসকারী উন্মাদরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, ওরা আপনার ওপর নির্ভরশীল নয় বরং আপনি ওদের ওপর নির্ভরশীল, তাই ওদের বয়ে গেছে আপনার আবেদন শুনতে। আর একটা বিষয় জেনে রাখুন আপনার ছাপ্পা মেরে জেতা বিধায়ক সাংসদদের হাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, গোটা মুর্শিদাবাদ ও মালদার মৌলবাদী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ এখন পিএফআই, সিমি ও আনসারুল বাংলা টিমের মতো জঙ্গি সংগঠনের হাতে"।
নূন্যতম লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন। রাজ্যে অরাজকতার আগুন জ্বেলে দিয়ে রাজনীতির রুটি সেঁকছেন আপনি।
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) April 12, 2025
উস্কানি আপনি দিয়েছেন তাই দায় আপনার, এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে বিপাকে পড়ে আবেদন জানাচ্ছেন।
তবে শুনে রাখুন, আপনার সৃষ্টি করা এই ধ্বংসকারী উন্মাদরা পরিষ্কার জানিয়ে… https://t.co/G99rCYT2si pic.twitter.com/p2aifzknUa
ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল মুর্শিদাবাদ। বিক্ষোভের জেরে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। এমনই অভিযোগ বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, গত রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুন্ডারা সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে বাবা ও ছেলে হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসকে কুপিয়ে খুন করেছে। জঘন্য এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে"। পাশাপাশি গোটা ঘটনায় মমতাকে নিশানা করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, "CAA-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় ক্রমাগত উস্কানিমূলক মন্তব্য করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করেছেন, আন্দোলনকে পূর্ণাঙ্গ হিংসায় পরিণত করেছেন, আপনি আবারও 'আগুনে ঘি ঢালার' একই কাজে লিপ্ত হয়েছেন। আপনারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে একইভাবে পথভ্রষ্ট করে রাজ্যে অস্থিরতা ও অরাজকতা তৈরি করছেন, যার পরিণতি এখন মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় স্পষ্ট। একটি কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করা দেশের সংবিধান এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শনের সমতুল্য। কিন্তু একটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে ভারতের সংবিধান রক্ষার শপথ নেওয়ার পরেও, এই ধরনের বেআইনি এবং স্পষ্টতই অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার সাহস দেখিয়েছেন, আপনার আর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে থাকার কোন অধিকার নেই"!
Even after the brutal persecution of innocent Hindus by fundamentalist jihadists in various parts of Murshidabad, your prolonged silence has instilled fear in the hearts of every Bengali Hindu in West Bengal. Just as in the recent past, you misled the minority community during… https://t.co/UCbOBMqHhz
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) April 12, 2025