Pakistan ceasefire violations: ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে তিনদিনের টানা গোলাবর্ষণ ও ড্রোন হামলার পর শনিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ রাত কাটিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই প্রথম এমন স্বস্তির মুহূর্ত এসেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সীমান্তে থেমেছে গোলাগুলি
জম্মুর উধমপুরে শনিবার সন্ধ্যায় সীমান্তের ওপার থেকে কিছু গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেলেও তা রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায়। এরপর আর কোনো যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘনের খবর পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে ‘আপাতত শান্তি’ ফিরে এসেছে। কোনো সাইরেন ব্ল্যাকআউটের ঘোষণা না হলেও বাসিন্দারা কেউ কেউ নিজেরাই ঘরে আলোর ব্যবহার বন্ধ রেখেছেন, আতঙ্কের রাত কাটিয়েছেন অনেকেই।
৭ মে থেকে শুরু হওয়া গোলাগুলি ও ড্রোন হামলায় জম্মু প্রদেশে অন্তত ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। আহত হয়েছেন আরও ৪০ জনের বেশি। এর আগে পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত পালটা প্রত্যাঘাত চালিয়েছে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে।
বারামুল্লার উরি থেকে শুরু করে কুপওয়ারার তাংধর, নোগাম ও বান্দিপুরায় শনিবার রাত গত তিনদিনের তুলনায় শান্তিপূর্ণ ছিল। উরির গারকোট গ্রামের বাসিন্দা মুশতাক আহমেদ বলেন, “তীব্র গোলাবর্ষণের পর আমরা গ্রাম ছেড়েছিলাম। গত রাত থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত।” তিনি আরও বলেন, 'শনিবার রাতে কোনও গুলির শব্দ শোনা যায়নি। দীর্ঘদিন পর এলাকার মানুষ রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছেন'।
শ্রীনগরে বিস্ফোরণ, তবুও স্বস্তি
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়। রাস্তায় আলো জ্বালানো ছিল, তিনদিন পর প্রথমবার কোনও সাইরেন বা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি।
পাঞ্জাব-রাজস্থানেও স্বাভাবিকতা
পাঞ্জাবের অমৃতসর, পাঠানকোট ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকায় রাতের শুরুতে ব্ল্যাকআউট জারি থাকলেও তা পরবর্তীতে তুলে নেওয়া হয়। রাজস্থানে কিছু পাক ড্রোন দেখা যাওয়ায় সাইরেন বাজানো হয়, তবে রাত ১১:৩০ টার পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরলাই বিমানঘাঁটির দিকে অগ্রসর হওয়া একাধিক ড্রোনকে গুলি করে নামানো হয়েছে। জয়সলমীর এলাকায় সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় প্রশাসন সতর্ক ছিল।
রবিবার সকাল নাগাদ প্রায় সব সীমান্তবর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ফিরোজপুর, জলন্ধর, হোশিয়ারপুরে রাতভর জেগে থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। চণ্ডীগড় ও অন্যান্য শহরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রা স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে।