/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/21/crime-2025-10-21-09-00-28.jpg)
Son kills father: বাড়ির সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নিহতের স্ত্রী।
আলোর উৎসবের মধ্যেই নৃশংস খুন! বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে মারল ছেলে। গজাল গাঁথা বাঁশ দিয়ে নির্মমভাবে খুন বিপত্তারণ রায়কে। খুনের অভিযোগ তাঁরই বড় ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার অন্তর্গত সগরাই রায়পাড়ায়। বৃদ্ধের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত ছেলে প্রদীপ রায়কে গ্রেপ্তার করেছে। বাবাকে পিটিয়ে খুন করা ছেলের ফাঁসির সাজার দাবিতে সরব হলেন মা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম সগরাই রায়পাড়া। সেখানেই বিপত্তারণ রায়ের বাড়ি।পেশায় তিনি ছিলেন খেত মজুর। তাঁর স্ত্রী সরস্বতীদেবীও খেত মজুরির কাজ করেন। বিপত্তারণের দুই ছেলে।বছর ২৪ বয়সী বড় ছেলের নাম প্রদীপ রায় এবং ছোট ছেলের নাম বেণীমাধব রায়। প্রদীপ ও বেণীমাধব দু’জনেই লরির খালাসির কাজ করে।
প্রতিবেশীদের কথায় জানা গিয়েছে, প্রদীপ খালাসির কাজ থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে ফিরলেই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের উপর অত্যাচার শুরু করত। মদ খেয়ে সে তাঁর বাবা ও মাকে নির্মমভাবে পেটাতো। প্রায় ৭-৮ বছর ধরে বৃদ্ধ দম্পতি বিপত্তারণ রায় ও তাঁর স্ত্রী সরস্বতী দেবী তাঁদের বড় ছেলে প্রদীপের নির্মম অত্যচার হজম করে আসছেন। রবিবার রাতেও মদ খেয়ে বাড়িতে ফিরে প্রদীপ একই রকম ভাবে তাঁর বৃদ্ধ বাবার উপর অত্যাচার শুরু করে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
নিহতের স্ত্রী সরস্বতী রায় বলেন, “রবিবার কাজ সরে বাড়ি ফিরতে তাঁর একটু দেরি হয়ে যায়। সন্ধ্যায় আমার স্বামী বাড়িতে একা ছিলেন। ওই সময়েই তাঁর বড় ছেলে প্রদীপ মদ খেয়ে বাড়িতে ফেরে। বাড়ি ফিরেই অকরাণে বাবার উপর চড়াও হয় ছেলে প্রদীপ। গজাল গাঁথা একটা বাশ নিয়ে প্রদীপ নির্মম ভাবে বাবাকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে।" তিনি আরও বলেন, "বাড়ি ফিরে দেখি স্বামী জখম অবস্থায় ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে কাতরাচ্ছে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে স্বামী জানান, তাঁকেপ্রদীপ নির্মম ভাবে বাঁশ দিয়ে পিটিয়েছে।"
আরও পড়ুন- West Bengal live news update:কালীপুজোর পর বড়মার মন্দিরে অভিষেক, কুণালের মন্তব্যে চর্চা
সরস্বতীদেবী চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বিপত্তারণ রায়কে উদ্ধার করে খণ্ডঘোষ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু শারীরিক অবস্থা সংকটজনক থাকায় ওই রাতেই বিপত্তারণ রায়কে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাঝ রাতে বর্ধমান হাসপাতালেই বিপত্তারণ রায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
এই খবর পেয়ে রাতেই খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ সগরাই রায়পাড়ায় বিপত্তারণ রায়ের বাড়িতে পৌছায়। বিপত্তারণের স্ত্রী এবং পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিপত্তারণের মৃত্যুর সবিস্তার কারণ জেনে পুলিশ প্রদীপ রায়কে পাকড়াও করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রদীপ রায়কে গ্রেপ্তার করে।
এসডিপিও ( বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন, বাবাকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে ছেলে প্রদীপ রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতের বিরুদ্ধে খুনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রতিবেশীদের পাশাপাশি নিহত বিপত্তারণ রায়ের স্ত্রী সরস্বতীদেবীও তাঁর ছেলে প্রদীপের ফাঁসির সাজা দাবি করেছেন।