New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/21/6swvdD4PnAgpElrdVmZ1.jpg)
Purba Bardhaman News: স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ অভিভাবকদের।
Bardhaman News: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ওই স্কুল চত্বরে। বিক্ষোভে পেটে পড়েন অভিভাবকরা।
Purba Bardhaman News: স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ অভিভাবকদের।
school teachers accused of molesting female students: তিন শিক্ষকের কু-কীর্তিতে মুখ পুড়ল গোটা স্কুলের। স্কুলে ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের গোপনাঙ্গে হাত দেওয়া থেকে শুরু করে অশ্লীল কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি কিছুই বাদ রাখতেন না ওই তিন শিক্ষক। এমনকী রাতে ছাত্রীদের ফোনে অশ্লীল মেসেজ করেও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ছাত্রীদের আনা এমনই সব অভিযোগ ঘিরে তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালী নিভাননী উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল।
কু-কীর্তিতে নাম জড়ানো স্কুলের ওই তিন শিক্ষক এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি পড়ুয়া ও অভিভাবকদের। সেই দাবিতেই স্কুলে চলে বিক্ষোভ। পরে পরিস্থিতি আরও বেশি উত্তপ্ত হলে স্কুলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছোয়। একই সময়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কৃষ্ণকান্ত কীর্তনীয়া সহ প্রশাসনের কর্তারাও পৌছোঁন স্কুলে। সকলের উপস্থিতিতে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্কুলের চাবি পরিচালন সমিতির সভাপতির হাতে তুলে দিলে বিক্ষোভে বিরাম পড়ে।
পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালী নিভাননী উচ্চ বিদ্যালয়ের যে তিন শিক্ষকের বিরূদ্ধে আশালীন ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন তাঁরা হলেন আলমগির হোসেন, বিজয় সরদার ও সত্যজিৎ চৌধুরী। ছাত্রীদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে ক্লাস চলাকালীন এই তিন শিক্ষক ছাত্রীদের গোপনাঙ্গে হাত দিচ্ছিলেন। এমনকী
অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা থেকে শুরু করে ছাত্রীদের ফোনে অশ্লীল মেসেজও করে যাচ্ছিলেন ওই তিন শিক্ষক। ইদানিং বিষয়টি চরমে উঠেছিল।
স্কুলের তিন শিক্ষকের এই কু-কীর্তি আর মেনে নিতে না পেরে ছাত্রীরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানায়। তারপরেও কোনও সুরাহা না মেলায় বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্রী-অভিভাবকরা। বিক্ষোভে সামিল হন এলাকার বাসিন্দারাও।
ওই স্কুলেরই এক ছাত্রীর কথায়, “অঙ্কের শিক্ষক সত্যজিৎ স্যার গত বুধবার আমার ফোনে উল্টোপাল্টা মেসেজ করেন। স্যার আমাকে ছবি, সেলফি পাঠাতে বলেন। ভূগোলের শিক্ষক আলমগির স্যারও স্কুলে ক্লাস চলাকালীন গাল টিপে দেওয়া থেকে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বহুবার হাত দিয়ে ‘ব্যাড টাচ’ করেছেন। ম্যাপ পয়েন্টিং করা শেখানোর অছিলায় তিনি ছাত্রীদের হাত চেপে ধরেন।” তবে ওই দুই শিক্ষক স্কুলে না আসায় তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন- RG Kar Case: ফের আরজি করের নারকীয় কাণ্ড নিয়ে তুঙ্গে চর্চা, নার্সদের পর নিরাপত্তারক্ষীদের CBI তলব
অভিভাবকরা ওই শিক্ষকদের ফোন করে চেপে ধরতেই তারা এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। অন্যদিকে, স্কুলে আসা আরও এক অভিযুক্ত শিক্ষক বিজয় সরদারের দাবি, এমন ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। স্কুল পরিচালন সমিতি স্কুলে জরুরি বৈঠকে বসে। সেই বৈঠকের পরেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মণ্ডল পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা সর্বসমক্ষে ঘোষণা করেন।
পরিচালন সমিতির সভাপতি অলোক নাথ স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেন, “ টিআইসি পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে আমার হাতে স্কুলের চাবি তুলে দিয়েছেন। তারপরেই বিক্ষোভ ওঠে। প্রশাসনকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। ওনারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা মেনে নেওয়া হবে।” এদিকে এই কথা শোনার পর পড়ুয়া ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ তুলে নেন। কালনা মহকুমা সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক কৌশিক ঘোষ বলেন, “ছাত্রীদের আনা অভিযোগের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।”
এদিকে ছাত্রীদের আনা অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে বিজয় সরদারকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও পলাতক বাকি দুই অভিযুক্ত শিক্ষক। তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে শুক্রবার ধৃত বিজয় সরদার নামে ওই শিক্ষককে কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হয়।