New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/03/28/pY3p8vfrjlG9EEdHd9x0.jpg)
Purba Bardhaman News: ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন প্রতিবাদ জানাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদে।
Purba Bardhaman News: ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন প্রতিবাদ জানাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদে।
purba bardhaman Zilla Parishad calls for tenders to recruit engineers: গত কয়েক বছরে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় এমনিতেই অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্য সরকারের। এরই মধ্যে এবার পূর্ব বর্ধমানে অবাক ঘটনা। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউয়ের বদলে টেন্ডার ডাকার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই স্বোচ্চার প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। মূলত তাঁদের চাপে নতিস্বীকার করে শেষ পর্যন্ত অবশ্য জেলা পরিষদ ওই টেন্ডার বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ এমন চাপের কথা মানতে নারাজ। এদিকে, এমন আজব-কাণ্ড জেনে স্তম্ভিত খোদ রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীও। প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছে বিরোধীরাও।
ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ ডাকার বদলে টেন্ডার ডাকা কার্যতই নজিরবিহীন ঘটনা। তাই এমন টেন্ডারের কথা জেনেই চমকে ওঠে প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাঁরা ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিটি তাঁদের ফেসবুকে পোস্ট করে জনসমক্ষে তুলে ধরে। তারপরেই ওই ফেসবুক পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে শুধুমাত্র ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে পোষ্ট করেই খান্ত থাকেনি প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিষয়টি নিয়ে তারা প্রতিবাদেও সামিল হয়।
প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন তাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছে, "চারজন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগের জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ চলতি বছরের ৫ মার্চ টেন্ডার মারফত দরপত্র ডাকে। বিষয়টি জানতে পেরে অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য প্রেসিডেন্ট ও জেলার নেতৃত্ব মিলে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি, ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকের (জেলা পরিষদ) কাছে প্রতিবাদ জানান। শুধু মুখে প্রতিবাদ জানানো নয়, সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সুব্রত ঘোষ লিখিত প্রতিবাদ পত্রও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরে দাখিল করেন। তাতে দাবি করা হয়, 'ইঞ্জিনিরার নিয়োগের এমন পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ এবং অপমানজনক।'
এদিকে ইঞ্জিনিয়ারদের এই সংগঠনের প্রতিবাদ বেশ চাপে ফেলে দেয় জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের কর্তাদের। সংগঠনের চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। গত ১৩ মার্চ জেলা পরিষদ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল ঘোষণা করে নোটিশ জারি করে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ারের স্বাক্ষর সম্বলিত সেই নোটিশ পত্রটিকে একপ্রকার জয়ের প্রতীক হিসেবে প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন তাদের ফেসবুক পেজে পোস্টও করে।
যদিও ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের জন্য টেন্ডার ডাকা এবং পরে ওই টেন্ডার প্রত্যাহার করা নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার ’ত্রুটির’ অজুহাত খাড়া করেছেন। তিনি দাবি করেন, “প্রগ্রেসিভ ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ জানিয়েছে বলেই আমরা টেন্ডারটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি এমনটা নয়। ওই টেন্ডার নোটিফিকেশনে কিছু টেকনিক্যাল ফল্ট ছিল। তাই টেন্ডারটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।"
জেলা পরিষদ টেন্ডার ঘোষণা করে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, "হ্যাঁ, এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ করাই যায়। এমনটা তো বহু জেলা পরিষদেই চলছে। এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া দু’জন ইঞ্জিনিয়ার আমাদের জেলায় তো কাজও করছেন।"
সভাধিপতি শ্যামাপ্রশন্ন লোহার এমনটা জানালেও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার প্রতিনিধির কাছ থেকে গোটা ঘটনার কথা শুনে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ ডাকার বদলে টেন্ডার ঘোষণার পরিকল্পনা কার মাথা থেকে এল, সেটা ভেবেই তো আমি আশ্চর্য্য হয়ে যাচ্ছি।" এর ব্যাখ্যা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কাছে চাইবেন বলেও পঞ্চায়েত মন্ত্রী জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh: 'ওখানে গুলি না চললে খবর', অর্জুন-গড়ে শুটআউটে চর্চায় দিলীপ-উবাচ!
এদিকে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ না ডেকে টেন্ডার ডাকার ঘটনা রাজনৈতিক মহলেও জোর শোরগোল ফেলে দিয়েছে। এই টেন্ডার কাণ্ডকে হাতিয়ার করে এখন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষে বিঁধে চলেছেন BJP নেতারা। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “বাংলায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মধ্যেই ঘটতে চলেছিল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড। ইঞ্জিনিয়াররা প্রতিবাদে নেমেছিলেন বলেই অঙ্কুরে তার বিনাশ ঘটা সম্ভব হয়েছে। নয়তো শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মতই বঙ্গে সাড়া ফেলে দিত টেন্ডার মাধ্যমে দরপত্র ডেকে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ কাণ্ড।"